ঢাকা: এ বছরই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পাওয়ার সুখবর পাবেন ইউরোপ প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রবাসীদের ব্যাপক চাহিদার কথা চিন্তা করে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে ইউরোপের ২-৩ রুটে ফ্লাইট চালানোর কথা ভাবছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, আমি জানি ইউরোপের দেশগুলোতে বিমানের জন্য প্রবাসীদের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তারা রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমানে করে দেশে যাতায়াত করতে চান। একসময় প্যারিস, রোম ও ফ্রাঙ্কফুটে বিমানের ফ্লাইট ছিল। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিমানের কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে।
তিনি বলেন, এইসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে আমরা এ বছরের শেষের দিকে ইউরোপে ফ্লাইট দেওয়ার কথা ভাবছি। আরও কয়েকটি রুটেও বিমান চলাচল শুরু করবে।
প্রবাসীদের অভিযোগ, বিমানের অসাধু কর্মকর্তা আর ইউরোপিয়ান এজেন্টদের ফন্দি-ফিকিরে বিমান লোকসানে পড়েছিল। অন্যান্য এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের টিকিটের দাম কম থাকলেও বিমানের টিকিটের দাম সবসময় ১০০-১৫০ ইউরো বেশি ছিল। এরওপর আবার বিমান কর্মকর্তা ও এজেন্টরা বেশি পরিমাণ কার্গো পরিবহনের লোভে যাত্রীদের টিকিট না দিয়ে ফ্লাইট ঢাকায় পাঠাতেন।
প্রবাসীদের দাবি, ইউরোপে বিমানের ফ্লাইট ফের চালুর আগে বিমান পরিচালনা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে এবং কর্মকর্তা-এজেন্টদের দুর্বৃত্তায়ন ভাঙার জন্য অনলাইন টিকেটিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
রোম প্রবাসী ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিমান রোমের ফ্লাইট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে কেবল লোকসানের কারণে নয়। এর পেছনে আছে বিমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে।
তিনি বলেন, কয়েকবারই বিমানের কর্মীরা রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দরে ইয়াবা জাতীয় মাদক নিয়ে ধরা পড়েছেন। ইতালি সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বারবার সতর্কও করা হয়। এ নিয়ে ইতালির গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বিমান কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করতে পারেনি। উল্টো লোকসানের দোহাই দিয়ে রুট বন্ধ করে দিয়েছে।
সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরেও বিমানের বিরুদ্ধে মিলেছে একাধিক অভিযোগ। এর প্রধান একটি হলো, যাত্রীদের সঙ্গে বিমানকর্মীদের দুর্ব্যবহার এবং টিকিট থাকতেও তা না দেওয়া।
বিমান সূত্র জানায়, পুনরায় ফ্লাইট চালুর ক্ষেত্রে অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে নতুন আঙ্গিকে ফ্লাইট চালু করবে প্রতিষ্ঠানটি। টিকিটপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রবাসীদের দাবি অনুযায়ী ই-টিকেটিং চালুর বিষয়ও বিবেচনায় আনা হবে।
সূত্র জানায়, ফ্লাইট চালুর ক্ষেত্রে বিমান রোম, প্যারিস ও ফ্রাঙ্কফুটকেই গুরুত্ব দেবে। তবে এ মাসের শেষের দিকে মন্ত্রীর বার্লিন সফরে সেখানে ফ্লাইট দেওয়াও বিবেচনায় আসেতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়, তবে তা দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
আরএম/এইচএ/