ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে এক মাসের আল্টিমেটাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে এক মাসের আল্টিমেটাম ছবি : শাকিল / বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

ঢাকা: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রকাশ করতে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। এক মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রকাশ না করতে পারলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া বলেও জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।



সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া এক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি জামালউদ্দিন।

তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি জানাতে ব্যর্থ হয় তবে কঠোর আন্দোলনে যাবেন সাংবাদিকরা। আমরা এরপর জনসংযোগ করবো, মিছিল সমাবেশে যাবো। রাজপথে এই বিচারের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করবো।

এর আগে সাংবাদিক সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে সমাবেশে যোগ দেয় তাদের একমাত্র সন্তান মেঘ। দুপুর সাড়ে ১২টায় মামা নওশের আলীর সঙ্গে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয় সাগর-রুনির এই সন্ত্রান। বেশ কিছুক্ষণ সমাবেশস্থলে অবস্থান করে দুপুর পৌনে ২টায় বাসায় ফিরে যায় সে।

এ সময় ইন্ধিরা রোডে রুনির মায়ের বাড়িতে আগামী শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মিলাদ মাহফিলে সবাইকে আমন্ত্রণ জানান মেঘের মামা নওশের।

৪৮ মাস পেরিয়ে গেলেও বিচার হয়নি সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের। বিচার না হওয়াকে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ ব্যর্থতা বলে স্বীকার করেন সাংবাদিক নেতারা।

সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকদের একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আগামীতে সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হলে, এই বিচারের দাবিকে আরও সোচ্চার করে তোলার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, স্বার্থ সংশ্লিষ্টতায় অনেকেই আন্দোলনকে ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত করেন। প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে, এই আন্দোলনে সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে নিজেদের দাবি আদায়ে আরও কঠোর আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন তিনি।

সমাবেশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রহমান মুস্তাফিজ বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু হলেও পরবর্তীতে দ্বিধাবিভক্তির কারণে আন্দোলনের গতি পড়ে যায়।

রুহুল আমিন বলেন, সে সময় যারা অন্দোলন শুরু করেছিলেন, আজ তাদের অনেকেই এখানে নেই। একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের দানা বাঁধতে পারিনি আমরা। এবারেও সব ইউনিয়ন, সংগঠন মিলে একটি সমাবেশ করতে পারিনি। ৪৮ ঘণ্টার সময় ৪৮ মাস পেরিয়েছে। তারপরও আমরা বিচার পাইনি। কার স্বার্থে বিচার পাইনি আমরা?

তিনি বলেন, জল অনেক গড়িয়েছে, ৠাব, পুলিশ ও ডিবি অনেক হাত ঘুরেছে। ডিএনএ টেস্ট নিতে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছিল স্যাম্পল। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। কেন পাওয়া যায়নি? জবাব দিতে হবে।

সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী আরও বলেন, আমরা যদি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না নিতে পারি তবে ইতিহাসের কাঠগড়ায় আমাদেরও দাঁড়াতে হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, সাগর-রুনির মৃত্যুর পর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি মেঘের দ্বায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে আজ পর্যন্ত একটি ফোনও মেঘকে দেওয়া হয়নি।

ডিআরইউ‘র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুন বলেন, একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন থেকে রুটি হালুয়ার ভাগে বা প্লটের লোভে সাংবাদিক নেতারা সরে এসেছেন।

একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া দুই সহকর্মীর বিচার পাওয়া যাবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সভাপতি মোস্তাক হোসেন, বর্তমান সাধারন সম্পাদক রাজু আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, নারী বিষয়ক সম্পাদক সুমি খান প্রমুখ।

সমাবেশে প্রায় শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত থেকে সাগুর-রুনি হত্যার বিচারের দাবি তোলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
এমএন/এসএ/এমজেএফ/

** বাবা-মা হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে মেঘ
** ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ব্যর্থতা
**  ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৪৮ মাস, এখনও আঁধারেই হত্যা রহস্য
**  সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ-তে সমাবেশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।