ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সাগর-রুনি হত্যা মামলা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
‘সাগর-রুনি হত্যা মামলা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে’

ঢাকা: মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি হত্যা মামলাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে মামলার বাদী নিহত মেহেরুন রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান এ অভিযোগ করেছেন।


বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘তদন্তে কালক্ষেপণের নামে মূলত মামলাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। মামলাটি নিয়ে র‌্যাব তাদের কিছু জানায় না। মামলাটিকে তদন্ত করছে তাও জানতাম না।

‘মঙ্গলবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মহিউদ্দিন এলে জানতে পারি তিনি মামলাটি তদন্ত করছেন। তবে মামলা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। ’

মামলাটি তদন্তে তদন্তকারী সংস্থার আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নওশের আলম রোমান।  

এ বিষয়ে জানতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মহিউদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সাগর রুনি হত্যার চার বছর পূর্ণ হচ্ছে। মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৪ বছরে ম্যাজিস্ট্রেট ৪৮ বার পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সশরীরে তলব করে মামলার অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন।

দীর্ঘসূত্রিতায় বিচার বিলম্বিত হচ্ছে উল্লেখ করে দ্রুত চার্জশিট দাখিলের তাগাদা দিয়েছেন। তবু মামলার তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি।

এরপর চার তদন্ত কর্মকর্তা শেরে বাংলানগর থানার এসআই (উপপরিদর্শক) জহুরুল ইসলাম, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রবিউল আলম, র‌্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জাফর উল্লাহ ও র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার ওয়ারেছ আলী মিয়ার হাত ঘুরে বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মহিউদ্দিন।

ঘটনার ৮ মাস পর ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর বনানী থানার একটি হত্যা ও ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার থাকা ৫ আসামি মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুন, রফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদকে গ্রেফতার দেখিয়ে এ মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়।

এছাড়া ওইদিনই আরও দুই আসামি রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান ও বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পালকে গ্রেফতার করা হয়।

পরবর্তীতে অপর দারোয়ান আসামি এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করা ছাড়া গত চার বছরে মামলার তদন্তে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই।
আসামি কামরুল হাসান ওরফে অরুন, বকুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ ও এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির কারাগারে আটক আছেন।
আসামি পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।

আসামি মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকলেও জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির কোনো আদেশ আদালতে না আসায় ম্যাজিস্ট্রেট ইউনুস খান তার জামিন বাতিল করেন। তবে মাসুম এ মামলার জামিনে থাকলেও অন্য মামলায় আটক ছিলেন।  

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। এরপর সাগর-রুনির মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করে র‌্যাব। ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুজ্জামানের উপস্থিতিতে সাগর-রুনির মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

তাতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, নিহত সাগর-রুনিকে হত্যার আগে কোনো নেশাজাতীয় খাবার পানীয় দেওয়া হয়নি এবং কোনো বিষও পাওয়া যায়নি।

এরপর ২০১২ সালের ৭ জুন থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত জব্দ আলামতের সঙ্গে ম্যাচিং করার জন্য ৮ আসামি ও সন্দেহভাজন ২১ আত্মীয়ের নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। মূলত এরপরই মামলার তদন্তে স্থবিরতা নেমে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
এমআই/এমএ

** সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে এক মাসের আল্টিমেটাম
** মৃত শিশুকে ভর্তি রেখে টাকা আদায় জাপান বাংলাদেশ মেডিকেলের!
** বাবা-মা হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে মেঘ
** ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ব্যর্থতা
**  ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৪৮ মাস, এখনও আঁধারেই হত্যা রহস্য
**  সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ-তে সমাবেশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।