ময়মনসিংহ: শীতের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে বসন্ত দ্বারপ্রান্তে। মাঘের শেষদিন শুক্রবারের (১২ ফেব্রুয়ারি) শুরুতে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে উত্তুরে হাওয়ার দাপট শেষে আচমকা বৃষ্টি ভিজিয়ে গেলো ময়মনসিংহ শহরকে।
মধ্যরাতে অপ্রস্তুত শহরের পথচারী ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য অবশ্য এ বৃষ্টি খানিকটা বিড়ম্বনাই ডেকে এনেছে। তবে মাঘের শেষ দিনের এ বৃষ্টি প্রকৃতির জন্য ইতিবাচক। বিশেষ করে এখানকার গ্রাম-গঞ্জের কৃষককূলের জন্য এ বৃষ্টি বয়ে এনেছে সুসংবাদ। সেচ নির্ভর স্বপ্নের বোরো ফসলের জন্য মধ্যরাতের কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়েই এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর থেকেই শুরু হয় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। রাত ১২টার পর বৃষ্টির মাত্রা বাড়লে নগরীর গাঙ্গিনারপাড়, স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিপাকে পড়েন স্থানীয় পথচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ সময় অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকা পড়ে নগরীর সানকিপাড়া, সানকিপাড়া শেষ মোড়, গোহাইলকান্দি, জামতলাসহ বিভিন্ন এলাকা। বিদ্যুৎ চমকের সঙ্গে এ সময় ছিল মেঘের গর্জনও।
ভারী বৃষ্টিতে নগরীর গাঙ্গিনারপাড় মোড় এলাকায় আটকা পড়েন বেশ কয়েকজন পথচারী। রাস্তায় কোনো যানবাহন না থাকায় তারা বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না।
প্রকৃতির এ খামখেয়ালিপনাকে তাদের কেউ কেউ জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে করেন। বর্ষাকালে তেমন বৃষ্টি না হলেও প্রতি ঋতুতেই কমবেশি বৃষ্টি নামছে, বলতে শুনা গেলো একজনকে।
তবে অসহায় পথচারীদের একজনের মুখে শোনা গেলো সেই বিখ্যাত খনার বচন, ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পুণ্য দেশ। ’ তার ভাষ্য, এ খনার বচনের সঙ্গে মধ্যরাতের বৃষ্টির সাদৃশ্য রয়েছে।
শহরের সানকিপাড়া শেষ মোড় এলাকায় যানবাহন না পেয়ে রাত দেড়টার দিকে পায়ে হেঁটে একটি ছাতার নিচে করে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রমজীবী বয়স্ক দুই নারী। তাদের সামনে ছাতা হাতে দেখা গেলো আরো কয়েকজনকে।
তারা যাচ্ছেন সামনের মীরবাড়ি এলাকায়। ‘বৃষ্টি নামবার আর সময় পাইছে না’, বলতে বলতে দৌড়ে পা ফেলছিলেন তারা।
একজন আবার বললেন, ‘মাঘের লগে মেঘের দেখা অইলো। শীত বিদায় নিলো। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬
আরএম