ঢাকা: বাণী অর্চনা, অর্ঘ্য-অঞ্জলিতে শুরু হয়েছে সরস্বতী পূজা। বিদ্যার এই দেবীর পায়ে ফুল, বেলপাতা, বই ও নানা শিক্ষা উপকরণ সমর্পন করে অঞ্জলি গ্রহণ করছেন শিক্ষার্থী, ভক্ত-অনুরাগীরা।
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে ভোর থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পাঁচ দফায় চলে দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া।
শিক্ষার্থী ছাড়াও শত শত ভক্ত পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে নিয়ে এসে দেবীর পায়ে অর্ঘ্য নিবেদন করে অঞ্জলি গ্রহণ করেন। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে তাদের এই প্রণতি।
রামকৃষ্ণ মিশনে শুরুতেই দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন রামকৃষ্ণ মঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অঞ্জলি গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক, বিদ্যানুরাগী ভক্তরাও তাদের পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে নিয়ে এসে অঞ্জলি গ্রহণ করেন।
রামকৃষ্ণ মিশনে পূজা পরিচালনা করেন স্বামী অমল মহারাজ। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন- রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ মহারাজ, মৃদুল মহারাজ, নিরঞ্জন মহারাজ, অমিয়ানন্দ মহরাজ, হরি মহারাজ, কল্যাণ মহারাজ প্রমুখ।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর বেলায়ও কয়েক দফা অঞ্জলি প্রদান করা হয়।
ধর্মমতে দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্থতে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য দেবী সরস্বতীর দ্যান করছেন। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বাণী অর্চনাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় আছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে মহাসাড়ম্বরে বিদ্যা ও আরাধনার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে পূজার্চনা। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট জগন্নাথ হল চত্বর জুড়ে বিভিন্ন আইডিয়া ও থিমভিত্তিক ৭০টির বেশি প্রতিমা স্থাপন ও মণ্ডপ নির্মাণ করেছে।
জগন্নাথ হল উপাসনালয়ে হল প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত একটি পূজা ছাড়াও এই মহোৎসবের বিশেষ আকর্ষণ থাকবে হলপুকুরে চারুকলা অনুষদের তৈরি ৪৫ ফিট দীর্ঘ বিশাল অবয়বের একটি প্রতিমা। এছাড়াও হল জুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বিদ্যার্থীরা তৈরি করেছে বিভিন্ন মোটিফের ওপর ভিত্তি করে প্রতিমা ও বিভিন্ন মেটাফোরিক্যাল মণ্ডপ। দৃষ্টিনন্দন এই মহোৎসবে প্রতিফলিত হয়েছে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির শাশ্বত মহিমা এবং একই সময় রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির কলাকৌশল ও বিজ্ঞানের সমন্বিত শিল্পরূপ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
এসএস/এমএইচপি/বিএস