ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সৌন্দর্য পিপাসুদের ফুলের আবেদন চিরন্তন

সৈয়দ হাসিবুন নবী, সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
সৌন্দর্য পিপাসুদের ফুলের আবেদন চিরন্তন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাভার (ঢাকা): ‌‘পুষ্প আপনার জন্য ফুটে না’ অর্থাৎ ফুল নিজের জন্য ফুটে না। এ কথাটি যেন একেবারে সত্যি।

ফুল মানুষের ভালোবাসার প্রতীক। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

আর এ ফুল চাষেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সাভার বিরুলিয়া ইউনিয়নের কৃষকরা। এ এলাকার অনেক কৃষক এখন ফসল চাষ বাদ দিয়ে ফুল চাষ শুরু করেছেন। গোলাপ ফুলসহ বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করে তারা সাফল্যের মুখও দেখেছেন।

সাভার উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, প্রতিবছর উপজেলার প্রায় ১৭ হাজার ৫৮০ হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে প্রায় আড়াইশ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ করা হয়।

বিভিন্ন দিবসে ফুলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফুল চাষিরা বেশ ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারেন। বিশেষ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে জামজমাট হয় ফুলের বাজার।

শুধু ভালোবাসা দিবসে নয়, সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছে ফুলের আবেদন চিরন্তন। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ফুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেড়েই চলেছে। ফলে ভালোবাসার ফুলে লেগেছে বাণিজ্যের ছোঁয়া। দিন দিন বেড়ে চলেছে ফুলের চাষ ও ব্যবহার। সাভারে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুল চাষ যেন তারই উদাহরণ।

ফুলের রাণী বলা হয় গোলাপ ফুলকে। প্রায় ৪০ বছর আগে কৃষক আব্দুল খালেক, মুসা মিয়া, মতি ও নূর মোহাম্মদসহ বেশ কয়েকজন কৃষক প্রথম বিরুলিয়া এলাকায় ফুল চাষ শুরু করেন। বর্তমানে ফুল চাষির সংখ্যা বেড়েই চলছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ফুল চাষ এবং ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

ঢাকা শহরের ফুলের পাইকারি বাজারসহ বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকারি বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে সাভারের ফুল। আর এসব বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে চাহিদা মতো সাধারণ মানুষের হাতে।

বিশেষ দিন, বিশেষ সময়, বিয়ের অনুষ্ঠান, শ্রদ্ধা নিবেদন, শিক্ষা ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ফুলের তুলনা নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে গোলাপের তুলনা অনন্য। সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর, কমলাপুর, মোস্তাপাড়া, কাকাবরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বাহারি ফুলের চাষে করা হচ্ছে।

স্থানীয় ফুল চাষি আশরাফ আলী বলেন, আমি মোট ৩০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছি। গোলাপ, জারবারা, গ্লাডিওলাসসহ কয়েক জাতের ফুলের বাগান করেছি। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফুলকাটা, জমি ও গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত থাকি।

স্থানীয় ফুল চাষি প্রণতী পালমা বলেন, যদি সরকারের সহযোগিতায় আমাদের উৎপাদিত ফুল বিদেশে রফতানি করা যায়, তবে বিপুল পরিমাণ বৈদাশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

ফুল ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরুলিয়া এলাকার চারটি পাইকারি হাট থেকে তারা ফুল কিনে ঢাকা আগারগাঁও ও শাহবাগে পাইকারি বাজারে বিক্রি করেন।

প্রায় ৭০-৮০ জন স্থানীয় পাইকার ও বাহির থেকে প্রায় ১শ’ পাইকার এসে এখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে যান। রাত ৩টার পরে এখান থেকে গাড়ি ও ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে এই ফুল চলে যায়।

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকরা আমাদের কাছে যে কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা যথাসাধ্য সাহায্য চেষ্টা করে থাকি। এছাড়া, কৃষকদের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তারা এসব কাজে লাগিয়ে সহজেই লাভবান হতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
টিআই/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।