ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহিরাঙ্গনে যাত্রীদের হারানো পাসর্পোট, লাগেজ, ল্যাপটপ, মোবাইলসহ বিভিন্ন দামি জিনিসপত্র ফেরত পাওয়ার হার বাড়ছে। এতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যদের উপর আস্থা বাড়ছে দেশি-বিদেশি যাত্রীদের।
যাত্রীদের হারানো জিনিসপত্র ফিরিয়ে দিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
এপিবিএন’র হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রীর হারানো জিনিসপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা।
এর ফলে আগের তুলনায় বিমানবন্দর এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কমে এসেছে বলে দাবি তাদের।
সম্প্রতি বিমানবন্দরে অবতরণের পর ক্যানোপি-২ এর বহিরাঙ্গনে হাফিজ আসাদুজ্জামান নামে এক যাত্রীর একটি লাগেজ হারানো যায়। এটি খুঁজে পান এপিবিএন’র নিরাপত্তা সদস্যরা। তারা লাগেজের মালিককে খুঁজে না পেয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্ট দেখে হাফিজ এপিবিএন’র অফিসে এসে যোগাযোগ করলে লাগেজটি ফিরে পান।
এ বিষয়ে হাফিজ বলেন, আমি সৌদি আরব থেকে সম্প্রতি দেশে আসি। বিমানবন্দরের বাইরে থেকে আমার লাগেজটি হারিয়ে যায়। লাগেজ না পেয়ে আমি বাড়ি (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার) চলে যাই। ধরেই নিয়েছিলাম, লাগেজটি আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এর পাঁচ দিন পর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখে আমি পরে এপিবিএন’র সঙ্গে যোগাযোগ করে লাগেজটি ফিরে পাই। তবে ওই লাগেজের ভেতরে থাকা কোনোকিছুই খোয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরের এপিবিএন সদস্যদের সততা ও নিষ্ঠা দেখে বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত।
এপিবিএন সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের বহিরাঙ্গনে এপিবিএন’র তত্ত্বাবধায়নে রয়েছে শতাধিক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। বিমানবন্দরের বাইরে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যাত্রীদের কোনো পণ্য যেমন- ব্যাগ, লাগেজ ইত্যাদি হারানো গেলে বা কেউ রেখে গেলে সেগুলো সিসিটিভির মাধ্যমে দেখে তা এপিবিএন অফিসে আনা হয়। পরে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে পণ্যের মালিকদের কাছে তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। তবে যে পণ্যের মালিকদের মাস অবধি খুঁজে যাওয়া যায় না, সেই পণ্যগুলো বিমানবন্দর থানায় পাঠানো হয়। যাত্রীরা সেখানে যোগাযোগ করলেও তাদের পণ্য ফেরত পেতে পারেন।
এছাড়া প্রতিদিনই বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীদের পাঁচ থেকে সাতটি পাসর্পোট পাওয়া যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাত্রীদের পাসর্পোট ফেরত দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে পণ্যের মালিকের কাছ থেকে প্রাপ্তিস্বীকার পত্র রাখছে এপিবিএন।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর এপিবিএন’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আলমগীর হোসেন শিমুল বাংলানিউজকে বলেন, বিমানবন্দরে যাত্রীদের হারানো মাল বা পণ্যের প্রায় শতকরা ৯৫ শতাংশ আমরা ফেরত দিতে পারছি। আর বাকি পাঁচ শতাংশ মাল বা পণ্যের মালিক না পেয়ে তা বিমানবন্দর থানার মালখানায় জমা দেওয়া হচ্ছে।
যাত্রীদের পণ্য যেনো কেউ চুরি করে নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য এপিবিএন’র সদস্যরা সর্বদাই তৎপর রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
এসজেএ/এসএস