ঢাকা: শিশু গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপিকে (১১) নির্যাতনের মামলায় ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী নিত্য শাহাদাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২০ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪ (২)/ খ ধারায় অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর এ দিন ধার্য করেন ঢাকার ৫ম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তানজিনা ইসমাইল।
জামিনে থাকা মামলার দুই আসামি শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী নিত্য শাহাদাত আদালতে হাজির ছিলেন। দোষী না নির্দোষ জিজ্ঞাসা করা হলে নিজেদেরকে নির্দোষ বলে দাবি করেন তারা।
নির্যাতিত গৃহকর্মী হ্যাপি ও তার পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সেফহোমে থাকা হ্যাপিকে নিজ জিম্মায় নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তার নানী মনোয়ারা বেগম। ট্রাইব্যুনাল হ্যাপির জবানবন্দি গ্রহণ করে এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি আলী আসগর স্বপন ও নাজমুল হুদা এবং জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। শাহাদাত ও নিত্যকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে শুনানি করেন তাদের আইনজীবী জিএম মিজানুর রহমান। এ আবেদন নামঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ০৬ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাজধানীর কালশী থেকে নির্যাতনে মারাত্মক আহত অবস্থায় হ্যাপিকে উদ্ধার করে পল্লবী থানা পুলিশ। তবে ওই দিন বিকেলে শাহাদাত মিরপুর থানায় তার বাসার গৃহকর্মী হারিয়েছে বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
রাতে সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ক্রিকেটার শাহাদাত ও তার স্ত্রী নিত্যকে আসামি করে মিরপুর মডেল থানায় নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন।
মারাত্মক আহত গৃহকর্মী হ্যাপিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে শাহাদাত ও নিত্যের বিরুদ্ধে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শফিক আহমেদ। গত ০৪ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ০৩ অক্টোবর দিনগত গভীর রাত সাড়ে তিনটায় মালিবাগের পাবনা গলিতে তার বাবার বাড়ি থেকে নিত্যকে গ্রেফতার করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। আদালতের অনুমোদনক্রমে তাকে তিনদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে ০১ ডিসেম্বর নিত্যকে জামিন দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত।
অন্যদিকে শাহাদাত গত বছরের ০৫ অক্টোবর সকালে ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। এ আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত। আদালতের নির্দেশে ০৮ অক্টোবর থেকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পরে ০৮ ডিসেম্বর শাহাদাতকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
এমআই/এএসআর