শেরপুর (বগুড়া) থেকে ফিরে: মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঐতিহাসিক মা ভবানী মন্দির প্রাঙ্গণে বসেছিলো পূণ্যার্থীর মিলনমেলা।
উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম ঐতিহাসিক এই মন্দির সংলগ্ন শাঁখারী পুকুরে পূণ্যস্নান উৎসবে মেতে ওঠেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ধর্মাবলম্বীরা।
সোমবার (২২ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দিনব্যাপী মন্দির প্রাঙ্গনে আসা হিন্দু ধর্মালম্বীরা ‘হে মহাভাগ শাঁখারী পুকুর, হে লৌহিত্য আমার পাপ মোচন কর’ পবিত্র মহামন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে এই স্নানোৎসবে অংশ নেন।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকেই পূণ্যলাভের আশায় মন্দির প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন তারা।
সোমবার সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের পদভারে মন্দির প্রাঙ্গণ ও আশেপাশের এলাকা কাঁনায় কাঁনায় ভরে ওঠে। দিনটি উপলক্ষে সকাল থেকেই হাজার হাজার নারী-পুরুষ মন্দিরস্থলে সমবেত হন। পূণ্য লাভের আশায় তারা শাঁখারী পুকুরে পূণ্যস্নান করতে নামেন। তিথি অনুযায়ী প্রতিবছর মাঘ মাসে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভ হয়। সেই আশায় দূর-দূরান্তের হাজার হাজার ভক্ত নারী-পুরুষ ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখারী পুকুরে স্নান করেন।
সঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রক্ষিত প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘ্যদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হয় প্রসাদ।
দিনাজপুর থেকে আসা রিতা রানী বাংলানিউজকে বলেন, মায়ের দর্শন নিতে মায়ের মন্দিরে এসেছি। মনের বাসনা পূরণের জন্য স্নান করেছি।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা মমতা ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, মায়ের কাছে আসলে দেহমন পবিত্র হয়। মন বাসনা পূর্ণ হয়। তাই মায়ের আশির্বাদ নিতে এখানে এসেছি।
প্রতিবছর এ উৎসবে মন্দিরের চারপাশে মেলা বসে। মেলায় মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ বাহারি খাবার পাওয়া যায়। সঙ্গে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তকও পাওয়া যায় এ মেলায়। এছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য মন্দির কমিটিও স্বেচ্ছাসেবক দলগঠন করেছে।
ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ প্রসাদ পোদ্দার বাংলানিউজকে জানান, বহু যুগ আগ থেকে ধর্মীয় তিথি মেনে এখানে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব হয়ে আসছে। এবারো এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
এমবিএইচ/বিএস