ঢাকা: বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করা অনেক কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা কবি রফিক আজাদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাকে।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে হাসপাতালের পরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হন কবি রফিক আজাদ। এরপর শনিবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। রোববার তার অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
একই হাসপাতালে ভর্তি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও কবির স্ত্রী দিলারা হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, তার (রফিক আজাদ) অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। এখন উনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কবি রফিক আজাদ ডায়াবেটিস, কিডনি ও ফুসফুস সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। প্রথমে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং পরে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কবি রফিক আজাদ। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাবা-মার কঠিন শাসন উপেক্ষা করে ভাষা শহীদদের স্মরণে খালি পায়ে মিছিল করেন তিনি।
চিরদিনই প্রতিবাদী এই কবি তার দ্রোহকে শুধু কবিতার লেখনীতে আবদ্ধ না রেখে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জাতির চরম ক্রান্তিকালে, ১৯৭১ এ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের সৈনিক হিসেবে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন তিনি।
কর্মজীবনে রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’র সম্পাদক ছিলেন। ‘রোববার’ পত্রিকাতেও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন।
এছাড়া টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনাও করেন তিনি।
রফিক আজাদের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে, ‘অসম্ভবের পায়ে’, ‘সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে’, ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
এ কাব্যের জন্য ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক পান তিনি।
সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন হুমায়ুন কবির স্মৃতি (লেখক শিবির) পুরস্কারসহ আরও বেশ কয়েকটি পুরস্কার।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬
এজেডএস/এমএ