ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীর ফুল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬
রাজশাহীর ফুল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: সাজ সাজ উৎসবে শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে সবাই। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।

  দুই উৎসব উদযাপনের প্রধানতম উপকরণ নানান রঙের নানান নামের আকর্ষণীয় ‘ফুল’। এ দুই দিনকে উপলক্ষ্য করে রাজশাহীতে এবার সাত লাখ টাকার ফুল আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এই ফুল নয় লাখ টাকারও বেশিতে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা।

আমদানিকৃত এসব তরতাজা ফুল শনিবার থেকেই শোভা পাচ্ছে মহানগরীর প্রধান সড়কসমূহ ঘেঁষে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতে। ফুল দিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের মালা গাঁথা, কাগজে মোড়নোর কাজ। বরাবরের মতো এবারও গুরুত্বপূর্ণ দু’টি দিন প্রায় একইসঙ্গে হওয়ায় কেনাবেচা ভালো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে, এবার ফুলের দাম গত বছরের চেয়েও বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তাই ফুলের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রেতাদের মুখে হসি ফুটলেও বছরের বিশেষ এই দিনে নারাজ ক্রেতারা।

মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে স্থায়ী ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। আর প্রতিটি দোকানের সামনেই নিজ নিজ পছন্দের ফুলটি বেছে নিতে ব্যস্ত রয়েছেন তরুণ-তরণীরা। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরাই এখন ফুলের দোকানগুলোর প্রধান ক্রেতা।

বর্তমানে মহানগরীতে স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় দেড় শতাধিক ফুলের দোকান রয়েছে। এরমধ্যে স্থায়ী ফুলের দোকান রয়েছে অর্ধশতাধিক। এসব ফুলের দোকানে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন রঙের গোলাপ, জুঁই, চামেলী, জারবেরা, রজনীগন্ধা, কালার গ্যালোডিয়াস, গাঁদাসহ নানা রঙ ও বর্ণের ফুল।

এসব ফুলের বেশিরভাগই আমদানি করা হয়েছে যশোরের ঝিকরগাছা ও গাজীপুর জেলা থেকে।

মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, যে গোলাপ ফুল দুই দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০ টাকায়, এ দু’দিনে তার দাম নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা।

রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ফাতিমা আফরোজ বাংলানিউজকে জানান, তার বাড়িতে ভাই-বোন রয়েছে। প্রতি বছর তিনি এই দিবসে বাবা, মা, ভাই-বোনদের গোলাপ ফুল দেন। এবারও দেবেন। কিন্তু ফুলের দোকানে গিয়ে দেখেন এবার দাম গত বছরের চেয়ে চড়া।

সময় বুঝে ব্যাবসায়ীরা ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে ব্যবসা করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ফায়সাল আহমেদ নামে এক তরুণ কয়েকটি দোকান ঘুরে একটি মাত্র গোলাপ কিনে জানালেন তার ক্ষোভের কথা। বললেন, প্রিয় মানুষকে অনেকগুলো ফুল দিয়ে চমকে দেওয়ার সাধ নিয়ে দোকানে আসলেও শেষ পর্যন্ত সাধ্যে কুলোয়নি।

মহানগরীর নিউমার্কেট এলাকার ফুল ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম জানান, রাজশাহীতে বেশিরভাগ ফুল আমদানি করা হয় যশোর থেকেই। কারণ সেখানে ভালোজাতের ফুল চাষ হয়। তবে এবার ফুল আমদানিতে খরচ বেশি পড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে এবার বেশি দামেই ফুল কিনতে হয়েছে। তাই এবার ফুলের দাম গতবারের চেয়ে বেশি ধরতে হচ্ছে। না হলে লোকসান হবে।

তিনি জানান, রোববার একটি লাল গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, কাগজে মোড়াতে লাগছে ২০-২৫ টাকা, অন্য রঙের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, রজনীগন্ধার স্টিক ১৫-২০ টাকা, কালার গ্যালোডিয়াস ৩০-৩৫ টাকা, ফুলের তোড়া সর্বনিম্ন সাড়ে ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা, জারবেরা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাঁদা প্রতি শ’ ৫০ টাকা।

রাশেদুল ইসলাম আরও জানান, ফুলের মধ্যে এবার রজনীগন্ধা ও গোলাপের চাহিদা বেশি। তরুণীদের পছন্দের মধ্যে রয়েছে জারবেরা ও কালার গোলাপ। তবে ভালোবাসা দিবসের জন্য আজ গোলাপের চাহিদাই বেশি।

তিনি আরও জানান, রাজশাহীতে এবার সাত লাখ টাকার ফুল আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এই ফুল নয় লাখেরও বেশি টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬
এসএস/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।