রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে জোর করে হোটেল দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার বোয়ালিয়াপাড়া এলাকার গৌসুল আজম সেখ নুরুল গনি তাদের হোটেল দখলের অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, গৌসুল আজম সেখ গণির স্ত্রী শাহানারা বেগম, ছেলে সেখ সালেহ আজম গণি ও সেখ নুরে আজম গনি।
ভুক্তভোগী গৌসুল আজম অভিযোগ করে বলেন, বোয়ালিয়া মৌজায় তার মায়ের নামে দশমিক ০৫৬৯ একর ও বাবার নামে দশমিক ৮০০ একর জমি আছে।
২০১১ সালের ৯ মে তার বড় বোন মৃত ফিরোজা সুলতানা, খুরসিদ জাহান রানী ও ছোট ভাই সেখ হাসিবুল গনি নিলু ওই জমির মধ্যে তাদের অংশ খায়রুল ইসলাম উজ্জ্বল নামে এক ব্যক্তির কাছে ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।
তিনি ওয়ারিশ হিসেবে খায়রুল ইসলাম উজ্জ্বলকে বিবাদী করে ২০১২ সালের ১৪ মার্চ আদালতে অগ্র ক্রয় মামলা করেন। ওই মামলা করতে গিয়ে আদালতে সোনালী ব্যাংক কোর্ট শাখার মাধ্যমে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়।
গৌসুল আজম সেখ নুরুল গনি বলেন, ওই সম্পত্তির মামলা চলাকালে সময় বিবাদী উজ্জ্বল আপোসের জন্য পারভেজ ও মান্না নামের দু’জনকে পাঠান। পরে উজ্জ্বল নিজেও তাদের কাছে আসেন।
ওই সময় উজ্জ্বল ওই জমির দাম ৬০ লাখ টাকা চান। উজ্জ্বলের ওই প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। পরে তার স্ত্রী শাহানারা বেগম ওই জমির দাম হিসেবে উজ্জ্বলকে ৪০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন।
তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য উজ্জ্বল তার ছোট ভাই সেখ হাসিবুল গনির কাছে যান। ওই সময় দুই দফা বসে ৪৭ লাখ টাকা দাম মেটানো হয়। উজ্জ্বলকে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। আর কথা হয় যে, অবশিষ্ট ৭ লাখ টাকা মামলাটি আপোস হওয়ার ৩ মাস পরে দেওয়া হবে।
ওই সময় জমিটি আব্দুর সবুর ও সাইদুর রহমান রিন্টু নামের দুই ব্যক্তির দখলে ছিলো। আপোসের কথা হওয়ার পরে উজ্জ্বল তাদের জমিটি দখলে নিতে বলেন।
গৌসুল আজম সেখ গনি বলেন, উজ্জ্বলের সঙ্গে আপোসের কথা হয়ে যাওয়ার পরে জমিটি নিজের দখলে নেওয়া হয়। সেখানে একটি হোটেল স্থাপন করা হয়। নাম দেওয়া হয় ‘মাদার ফুডস কালেকশন’। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই হোটেলটি উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অতিথি হিসেবে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিলো আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারকে।
কিন্তু গত ০৯ ফেব্রুয়ারি খায়রুল ইসলাম উজ্জ্বল ও তার ভগ্নিপতি খোকার নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল হোটেল হামলা চালায়। ওই সময় হোটেলে থাকা তার ছোট ছেলে পাভেলকে হোটেল থেকে বের করে দেন তারা। হামলাকারীরা হোটেলের ভেতরে থাকা ফ্রিজ, ডিপ ফ্রিজ, কম্পিউটার বাইরে ফেলে দেন। ওই সময় লম্বা ফ্রিজে থাকা ১১৯ কেজি ছাগলের মাংস লুট করে নিয়ে যান। শুধু তাই না, হোটেলের দরজায় ৬টি তালা মেরে সাইনবোর্ড খুলে নিজের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন।
তার দাবি, ওই ঘরের মধ্যে দু’টি এলইডি টেলিভিশনসহ এক লাখ টাকার বেশি মূল্যের আসবাবপত্র আছে। সেগুলো ক্ষতি ও হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
এ ঘটনায় তিনি বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। হোটেলটি নির্মাণ করতে গিয়ে তিনি আরো ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন বলেও দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
এসএস/এএসআর