ঢাকা: প্রতিবছর ছয় থেকে ১২ হাজার শিশু ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে, অথচ এসব শিশু রোগীর জন্য মাত্র ৯০টি বেড রয়েছে। যা সঠিক চিকিৎসার অন্যতম বড় অন্তরায়।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ডহুড ক্যানসার ডে উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (বিএসএমএমইউ) ডিপার্টমেন্ট অব পেডিয়াট্রিক হেমাটোলোজি অ্যান্ড অনকোলোজি এ সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক নিজের সন্তান ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার স্মৃতিচারণ করে এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি জানান, দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো হয় তার ছেলেকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সেদিন থেকে ক্যানসারের সঙ্গে তার পরিচয়।
মেয়র বলেন, হাজারের অধিক ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুর জন্য মাত্র ৯০টি বেড রয়েছে, যা প্রয়োজন অনুযায়ী খুবই অপ্রতুল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান বলেন, এক সময় ‘ক্যানসার হলে নাই রক্ষা’ একথা বলা হতো। কিন্তু বর্তমানে সময় বদলেছে। এখন যদি ঠিকমতো চিকিৎসা দেওয়া হয় তাহলে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ চিকিৎসার ফল ভালো পাচ্ছেন। এটা আমাদের অনেক বড় পাওয়া।
তিনি বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসার প্রসারতা বাড়াতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু ক্যানসার রোগীর জন্য বেডের সংখ্যা বাড়ানো খুবই জরুরি। প্রয়োজনে ট্রাস্ট করা যেতে পারে।
দেশের কল্যাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই বিশেষজ্ঞ।
ক্যানসারের ওষুধ পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা ভোগান্তির শিকার হন বলে অভিভাবকেরা জানান। মোস্তাক নামে এক অভিভাবক বলেন, চিকিৎসকদের মূল হাতিয়ার ওষুধ সরবরাহ করতে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ওষুধ দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় এর সুযোগ নেয় ওষুধ বিক্রেতারা।
স্বল্প সময়ের জন্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিশুদের ক্যানসারের নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। সভায় সভাপতির বক্তব্যে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর কামরুল হাসান খান বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা অনেক এগিয়েছে। কিন্তু অবকাঠামোসহ ব্যবস্থপনা আমাদের আরও বাড়াতে হবে। আমাদের চিকিৎসকদের সক্ষমতা অনেক বেশি।
বিএসএমএমইউ'র ডিপার্টমেন্ট পেডিয়াট্রিক হেমাটোলোজি অ্যান্ড অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইয়াকুব জামান বলেন, বিভিন্ন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, বিশেষজ্ঞ ও গবেষণা করে ধারণা করা হচ্ছে প্রতি বছর ছয় থেকে ১২ হাজার নতুন করে বিভিন্ন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এছাড়া ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া শিশুদের সঠিক নিবন্ধন করার ব্যবস্থা নেই। এদিকে নজর দেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
একে/আরইউ/এএ