ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের পুরান থানা রোডের ‘মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’র (হাসপাতাল) চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে মৃত নবজাতক দিয়ে জীবিত নবজাতক পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক সকাল ১০ টায়।
নবজাতকের বাবা শামসুল ইসলাম বুলু অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, আমি গরিব-নিরীহ মানুষ। হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরা আমার ছেলে বাচ্চাটারে লুকায় ফালাইছে। মরা একটা মেয়ে বাচ্চাকে বলে এটা আপনার বাচ্চা। অথচ এর আগে কয়েকবার আমার বৌ’র আল্ট্রাসনোগ্রাম করাইলে প্রত্যেকবার ডাক্তার বলছে আমার ছেলে সন্তান হবে।
আমাদের বাসা মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায়। সকালে স্ত্রী পারভীনের প্রসব ব্যথা উঠলে দ্রুত এ হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে ভেতর থেকে এক নার্স এসে আমাকে জানায় আমার ছেলে সন্তান হয়েছে। আমার সঙ্গে দু’জন আত্মীয় ছিলেন। তারা সার্বক্ষণিক অপারেশন থিয়েটারের বাইরে ছিলেন।
এদিকে কয়েকজন নার্স এসে আমাকে বলে কাগজে লেখা ওষুধগুলো নিয়ে আসেন। পরে তাদের মধ্যে এক নার্স আমার ওই দুই আত্মীয়কে বলে, আপনারা আমার সঙ্গে আসেন।
কিছুক্ষণ পর আমি ওষুধ নিয়ে আসলে অপারেশন থিয়েটারের ভেতর থেকে আমাকে জানানো হয়, আপনার মরা মেয়ে বাচ্চা হইছে। আমাদের কিছু করার নাই। যোগ করেন ভুক্তভোগী বুলু।
বুলু জানান, তিনি বছিলা এলাকায় লেপ-তোষকের ব্যবসা করেন। স্কুল পড়ুয়া ৯ বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে তার।
তবে অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝি উল্লেখ করে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে এ রোগী ভর্তি হন। তবে বাচ্চা ও মা দু’জনের অবস্থা খারাপ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে আমাদের অপারেশন করাতে হয়েছে। তার যে সমস্যা হয়েছিল ডাক্তারি ভাষায় তা ‘কট কলাপস’ সমস্যা। এ কারণে বাচ্চাটিকে বাঁচানো যায়নি। ওই সময় অপারেশন থিয়েটারে একটি অপারেশনই হয়েছিল। অন্য কোনো অপারেশনের বিষয়ে আমার জানা নেই।
চিকিৎসক হেলেন জেবিন বলেন, এ রোগী আমাদের এখানে আগেও চিকিৎসা নিয়েছে। গত ৯ তারিখেও তিনি চেকআপ করাতে এসেছিলেন। তখন তাকে বলা হয়েছে তিনদিন পর আসতে। কিন্তু তিনি আসেননি। আজ সকালে তিনি হাসপাতালে আসলে অবস্থা খারাপ দেখে আমরা অপারেশন করাই। কিন্তু বাচ্চা ও বাচ্চার মা উভয়ের অবস্থা খারাপ থাকায় বাচ্চাটি পেটেই মারা গেছে। ভূমিষ্ট হওয়ার পর আমরা ত্রিশ মিনিট পর্যবেক্ষণ করেও বাচ্চার হৃদক্রিয়া সচল পাইনি।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি, আরো খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬/আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা
এসজেএ/এনএইচএফ/জেডএস