ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কামাইয়ের মৌসুমেই জলদস্যুদের হানা

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
কামাইয়ের মৌসুমেই জলদস্যুদের হানা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বছরে চার থেকে ছয় মাস সমুদ্রে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন জেলেরা। মৌসুম শুরুর পর হাড় ভাঙা পরিশ্রমে জেলেরা ধরেন মাছ।

দুবলার চর থেকে: বছরে চার থেকে ছয় মাস সমুদ্রে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন জেলেরা। মৌসুম শুরুর পর হাড় ভাঙা পরিশ্রমে জেলেরা ধরেন মাছ।

তবে এ সময়টা বঙ্গোপসাগরের বুকে হাজারো ভয়ের মাঝে জলদস্যুর আক্রমণের ভয় তাদেরকে সারাক্ষণ তাড়া করে। একবার তাদের শিকার হলে মৌসুমের লাভের পুরোটাই যায় জলদস্যুদের পিছনে। আর উদ্ধার করতে না পারলে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি।
তবে মৌসুমের শুরুর দিকের চেয়ে শেষ দিকে ঠিক যখন জেলেদের হাতে মাছ বিক্রির টাকা এসে জমা হয়, তখনই তারা জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হন বলে জানান জেলেরা।
রোববার (নভেম্বর ১৪) সুন্দরবনের দুবলার চরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এক মাস হলো সমুদ্রে নামার। এখন সমুদ্রে মাছ ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে। কিছুদিন পরই তাদের হাতে লাভের অর্থ আসবে। আর তখন জলদস্যুরা হানা দেবে জেলেদের ট্রলারের উপর।
দুবলার চরে নিজের শুঁটকির চাতালে জলদস্যুদের আক্রমণের কথা বলছিলেন রামপালের জিন্নাত আলী শেখ।

তিনি বলেন, গত বছর আমার শ্যালককে নিয়ে গেছিল, ছাড়াতে প্রায় লাখ টাকা খরচা। এবার এখনও ডাকাতের খবর শোনা যায়নি, তবে সামনে সময়টা খারাপ। এজন্য সাবধান থাকতে হয়।
শুধু শ্যালক বা স্বজন বলেই নয়, চাতাল মালিককেই তার দলের জেলেদের সব দায়-দায়িত্ব নিতে হয়। কোন চাতালের শ্রমিককে জলদস্যু ধরলে তাকে ছাড়ানোর জন্য মুক্তিপণ দেওয়া সেই চাতাল মালিকেরই দায়িত্ব। সেই চুক্তিতেই জেলেরা মাছ ধরার কাজ নেয়।
দুবলার চরে খেজুর তলায় রামপালের শুকুর আলীর শুঁটকি মাছের চাতাল। বলেন, সব থেকে বড় সমস্যা এখন জলদস্যু। কামাইয়ের সময়টায় জলদস্যুরা হামলা করে দু’একজন জেলেকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। পরে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হয়।
জেলেরা জানান, এক মাস আগে মাছ ধরা শুরু হওয়ার পর এ মৌসুমে এখনো কোন জেলে ট্রলারে জলদস্যু হানা দেয়নি। তবে মৌসুম শেষে জেলেদের হাতে যখন টাকা আসে, তখনই তাদের কবলে পড়তে হয়।
সমুদ্রের অধিকাংশ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করলেও জাহাঙ্গীর বাহিনীর দাপট এখন বেশি বলে জানান জেলেরা। এছাড়া আরও কিছু ছোটখাটো বাহিনীর ভয়ে থাকেন তারা। এ জন্য জলদস্যুদের পুরোপুরি নির্মূলের দাবি করেছেন বঙ্গোপসাগরের প্রান্তিক পর্যায়ের জেলেরা।
তবে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের মধ্যে যারা বড় ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের বিচারের মুখোমুখি করার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রোববার দুবলার চরে রাসমেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যারা খুন, ধর্ষণ, হত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আর যারা কেবল সেখানে (দস্যু বাহিনী) গেছে তাদের আমরা অন্যভবে দেখছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
এমআইএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।