রাসমেলা (দুবলার চর) থেকে ফিরে: জেলেদের হাতে নগদ টাকা না থাকায় সুন্দরবনের দুবলার চরে অনুষ্ঠিত রাসমেলায় দোকান সাজিয়ে এবার লোকসান গুনেছেন ব্যবসায়ীরা। ১৩ নভেম্বর সোমবার দুবলার চরে এ রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট থেকে প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী এ মেলায় মনোহরী, জুয়েলারি, কাপড়, শীতের কাপড়, প্রসাধনী সামগ্রী, হোটেল, খেলনা, কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন।
মেলায় চটপটির দোকান দেওয়া খুলনার কয়রা থেকে আসা আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি সংখ্যক পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থী এবারের মেলায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু ক্রেতা ছিলেন কম।
‘খুলনা থেকে ট্রলার ভাড়া করে চেয়ার টেবিল, ডেকোরেটরের জিনিসপত্র ও খাবারের মালামাল আনতে হয়েছে। এছাড়া দিতে হয়েছে কর্মচারীর বেতনও। মেলায় আসতে বনবিভাগকে জনপ্রতি দুইশ পঞ্চাশ টাকা ও বনে অবস্থানের জন্য ট্রলার ভেদে পাঁচশ থেকে একহাজার ৪০০ টাকা ফি গুনতে হয়েছে। ’
‘কিন্তু সে অনুযায়ী বেচা-বিক্রি ভালো হয়নি। আমাদের লোকসান দিতে হয়েছে। ‘ বলেন তিনি।
এর কারণ প্রসঙ্গে এই ব্যবসায়ী বলেন, মেলার সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলেন এখানে অবস্থান করা প্রায় ১০হাজার জেলে। কিন্তু তাদের হাতে কোনো টাকা নেই এখন। গত ২২দিন ধরে মাছ ধরতে যাননি তারা। খেনও সেভাবে মাছ ধরা পড়ছে না।
‘অনেক জেলে মাত্র ২/৩ দিন হয় চরে এসেছেন। তাদের হাতে টাকা না থাকায় মেলাতেও বিক্রি হয়নি। ’
শাহীন বাবুর্চীর মুরগির বিরিয়ানি বিক্রি করা আফরান ও গ্রিল মান্নান চটপটি হাউজের আকরাম মোড়ল বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিক্রি দেখে মনে হচ্ছে এবার মেলায় লোকসান হবে। খরচের টাকাও উঠবে না। ’
একই কথা জানিয়েছেন খুলনার কয়রা থেকে আসা মুদি দোকানি আশরাফ আলী, মনোহরী দোকানি শাহীনসহ আরও কয়েকজন।
এদিকে এবারের মেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকাকেও লোকসানের কারণ হিসেবে দেখছেন অনেক ব্যবসায়ী।
নাম প্রকাশে বেশ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, মেলা কমিটি রাত সাড়ে ৮টার পর দোকানগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এ কারণে অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থী দোকানগুলোতে আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
এমআই/এমএ