গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতালরা অবশেষে সরকারি ত্রাণ নিয়েছেন।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরার নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দল সাঁওতালদের মধ্যে এসব ত্রাণ বিতরণ করেন।
এসময় তারা মাদারপুর ও জয়পুরপাড়ার সাঁওতালদের মধ্যে চাল, আলু, লবন, তেল ও কম্বল বিতরণ করেন।
এসময় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহম্মদ আলী ও উপজেলা ত্রাণ কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ১৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হান্নান ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ত্রাণ দিতে গেলে সাঁওতালরা ত্রাণ নেননি। নিজেদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ নেবেন না বলেও জানিয়েছিলেন তারা।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর রউফ জানান, উচ্ছেদকৃত জমিতেই পুনর্বাসন করা, ওই জমির চারপাশ থেকে অবিলম্বে চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাঁটা তারের বেড়া অপসারণ, আখ চাষ বন্ধ এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন সাঁওতালরা।
এছাড়া সাঁওতাল পল্লী উচ্ছেদের সময় হামলা, ভাঙচুর এবং তাদের জমি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায়ের সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তারা।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ সাঁওতালদের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ছয় মেট্রিকটন চাল, ৫০ হাজার টাকা এবং ৩শ’ কম্বল বরাদ্দ করেন। ওই দুই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০টি পরিবারের জন্য ত্রাণ প্যাকেজ করা হয়। প্রতিটি পরিবারের জন্য ২০ কেজি করে চাল, এক কেজি করে ডাল, এক লিটার সয়াবিন তেল, লবন, এক কেজি আলু ও দু’টি করে কম্বল দেওয়া হবে।
এছাড়া গৃহহীন ছিন্নমূল সাঁওতাল পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করার জন্য গোবিন্দগঞ্জের কাটাবাড়ি এলাকায় ১০ একর খাস জমি বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। যেখানে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতাল পরিবারগুলোকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে উপজাতীয় নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বিশেষ উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যাতে তারা আর্থিক ও সামাজিকভাবে উন্নত জীবন পেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
এসআই