ঢাকা: পদ্মাসেতুর এপার-ওপার যোগ করে ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক মানের সড়ক (এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর)। ঢাকা থেকে মাওয়া এবং পদ্মার ওপার জাজিরা থেকে পাচ্চর হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এ সড়কটি হবে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে।
রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ব্যয়বহুল এ সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়ে হলে ঢাকা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত যেতে মাত্র ৪০ মিনিটের মতো সময় লাগবে। চারলেনের এ সড়পথের মাঝামাঝি থাকবে ‘মিডিয়ান’। যেখানে ভবিষ্যতে মেট্রোরেল নির্মাণ করা যাবে।
৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে ৬টি ফ্লাইওভার, ৪টি রেলওয়ে আন্ডারপাস, ১৫টি আন্ডারপাস এবং ৩টি ইন্টারসেকশন।
তবে পদ্মাসেতুর মাওয়া ও জাজিরা দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজ প্রায় শেষের পথে রয়েছে। আর ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হবে এ এক্সপ্রেসওয়ের কাজ।
এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন মাওয়া পর্যন্ত পাচ্চর-ভাঙ্গা অংশ দ্রুত ও ধীরগতির যানবাহনের লেনসহ ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ এখন শুরু হচ্ছে ।
ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুর- এ চার জেলার মধ্যে দিয়ে যাবে এক্সপ্রেসওয়ে।
প্রকল্পটি গত মে মাসে একনেকে অনুমোদন করা হয়। ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে।
দু’টি প্যাকেজের এ প্রকল্পের প্রথম প্যকেজটি হলো যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার। এবং দ্বিতীয়টি হলো পাচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার।
প্রকল্পের অধীনে আব্দুল্লাহপুর, হাসাড়া, শ্রীনগর, কদমতলী, পুলিয়াবাজার ও সদরপুরে ৬টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
জুরাইন, কুচিয়ামোরা, শ্রীনগর ও আতাদিতে ৪টি রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। যাত্রাবাড়ী, তেঘরিয়া, ও ভাঙ্গায় হবে ৩টি ইন্টারচেঞ্জ।
সরকারের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের পূর্বাঞ্চলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন নিরাপদ, সময় সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক হবে। এছাড়া ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে যানবাহন যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন ব্যবহার করে খুব দ্রুত দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করতে পারবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, ঢাকা থেকে মাওয়া ও মাদারীপুরের পাচ্চর হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটারের চারলেন হবে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। এটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার। অন্য অংশ হলো পাচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। মাঝখানে পদ্মাসেতুর সংযোগ সড়ক ইতোমধ্যে প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেছে। ৫৫ কিলোমিটারে ৬টি ফ্লাইওভার ছাড়াও প্রকল্প এলাকায় সব মিলিয়ে ৩১টি সেতু হবে। তার মধ্যে পিসি গার্ডার সেতু হবে ২০টি, আরসিসি সেতু হবে ১১টি। এগুলোর মধ্যে ধলেশ্বরী-১ সেতু ২৫৮ মিটার দীর্ঘ, ধলেশ্বরী-২ সেতু ৩৮২ মিটার দীর্ঘ এবং আড়িয়াল খাঁ সেতু হবে ৪৫০ মিটার দীর্ঘ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
এসএ/এএসআর