কলকাতা থেকে ফিরে: সীমান্তে অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশই আপ্রাণ চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) পি এস আর অ্যাঞ্জানেয়ুলু (আইপিএস)।
গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) কলকাতারলর্ড সিনহা রোডে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (১৪ নভেম্বর) ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আমন্ত্রণে ও বাংলাদেশে অবস্থিত ইন্ডিয়ান হাইকমিশনের সহযোগিতায় গণমাধ্যমের প্রতিনিধি দল ইন্দো-বাংলা বর্ডার পরিদর্শন করে। তিনদিনের এই সফরে বিএসএফ সদস্যরা তাদের বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখান।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাগত জানিয়ে আইজি অ্যাঞ্জানেয়ুলু বলেন, বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও বিএসএফ চাইছে দুই দেশের সীমান্তে হত্যাকাণ্ড কীভাবে শূন্যে নিয়ে আসা যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে যেসব ব্যাটালিয়ন কাজ করছে তাদের বলা হয় যে, জুম্ম-কাশ্মীরে যেভাবে কাজ করা হয়, এখানে একই কৌশলে কাজ করা যাবে না। কারণ, বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। কীভাবে তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচারণ করা যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। সীমান্তে নন-লেথাল অস্ত্রের ব্যবহার এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে একটু সময় লাগবে।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের অধিকাংশই চোরাচালান, গরু ও মাদক পাচার নিয়ে ঘটে থাকে বলেও জানান নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি। তিনি বলেন, আমাদের সৈন্যরা খুব কাছ থেকে আক্রমণের শিকার না হলে গুলি করে না। অপরাধীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। তখন বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে হয়। আমরা সবসময় বলি, গুলি চালিয়ো না, গুলি চালানো লাস্ট স্টেজ। আমাদের মন্ত্রণালয় এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের স্পষ্ট নির্দেশনা আছে, যেকোন ধরনের হতাহতের ঘটনা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কিছু ঘটনা ঘটে। এগুলোও ঘটুক আমরা চাই না। তবে অতীতের তুলনায় অপরাধ প্রবণতা কমছে।
তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে, একটা সময়ে এটা কমে আসবে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যে নেমে আসবে। যদি আমার কাছে জানতে চান কবে, সেটা সময় বেঁধে বলা যাবে না। আমরা উভয় বাহিনীই চেষ্টা করছি আমাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। আমরা বিশ্বাস করি এটা শূন্যে আনা যাবে।
একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে অ্যাঞ্জানেয়ুলু বলেন, ২০১৩ সালে লেথ্যাল অস্ত্রের ফায়ারিং ঘটনা ঘটে ১৫টি, আর নন লেথ্যাল অস্ত্রের ফায়ারিং ঘটনা ঘটে ১৮৮টি। পরের বছর ২০১৪ সালে লেথ্যাল ৩২টি, নন লেথ্যাল ৫৮৮টি, ২০১৫ সালে লেথ্যাল ৮৬টি, নন লেথ্যাল ৮৭১টি এবং ২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত লেথ্যাল ৯১টি, নন লেথ্যাল ৬৭৩টি।
বিএসএফ-এর গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক মারা যাওয়ার পরিসংখ্যান বিজিবির কাছে থাকলেও বিজিবির গুলিতে কতজন ভারতীয় নাগরিক মারা গেছেন এমন কোনো পরিসংখ্যান নেই বলেও জানান আইজি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬
এসএম/এমজেএফ