বগুড়া: আয়েশা বেগম। স্বামী খোরশেদ আলম ব্যাপারী।
কিন্তু বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ায় সামলে উঠতে পারছিলেন না তারা। হাড়ভাঙা খাটুনির পরও ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের ঘাটতি বরং বাড়তেই থাকে। এভাবে দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের জন্য সর্বোচ্চ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। এরপরও মাঝে মাধ্যে তাদের অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করতে হতো।
তবে বিজিএমইএ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বদলে দিয়েছে আয়েশার ভাগ্য। এখান থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। এরপর ঢাকার গাজীপুরে অবস্থিত একটি টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি জোটে তার। প্রায় বছর দুয়েক আগের কথা এসব। বর্তমানে স্বামী-সন্তান নিয়ে স্বচ্ছল জীবন কাটছে তার।
২০১২ সালের ১ এপ্রিলের কথা। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় চালু হয় বিজিএমইএ নিয়ন্ত্রিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকে এ অঞ্চলের বেকার নারী-পুরুষরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। পাশাপাশি নিজেদের কর্মসংস্থানে আত্মনিয়োগ করছেন।
উপজেলা পরিষদের একটি ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। গার্মেন্টসের সোয়েটার, গেঞ্জি তৈরি ও মেশিন অপারেট ইত্যাদি বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এখানে। ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট (SEIP) প্রোগ্রাম চালু করা হয়।
এই কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক মো. মঞ্জুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নানা বিষয়ের ওপর এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ১শ’ ৪০জন বেকার নারী-পুরুষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে বিভিন্ন গার্মেন্টস ও ফ্যাক্টরিতে চাকরি করছেন ১ হাজার ১শ’ ৪৯জন।
তিনি আরো জানান, প্রশিক্ষণের মেয়াদ মাত্র দুই মাস। প্রশিক্ষণ শেষে বিনামূল্যে সার্টিফিকেট ও প্রশিক্ষণের যাবতীয় উপকরণ প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রত্যেককে ৬ হাজার ২শ’ ৪০টাকা ভাতা প্রদান করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক মো. মঞ্জুর রহমান জানান, প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের সিংহভাগ দরিদ্র পরিবারের লোকজন। এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১১ জন স্টাফ রয়েছেন। যারা প্রত্যেকেই অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
সব মিলিয়ে এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আয়শার মত এসব অভাবী মানুষের সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে বলেও মন্তব্য করেন কেন্দ্রের এই তত্ত্বাবধায়ক।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
এমবিএইচ/আরআই