দিনাজপুর: মনসুরা বেগম ও আব্দুল মান্নান দম্পতি ভাড়া থাকেন দিনাজপুর শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা এলাকার হঠাৎপাড়া বস্তিতে।
১৫ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর বছর পাঁচেক রিকশা চালাতেন আব্দুল মান্নান। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা আনতে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন মনসুরা। একটা সময় দু’জনের উপার্জনে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।
এমন সময় দু’জন মিলে ছাগলের খাদ্য হিসেবে কাঁঠাল পাতা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। যেই কথা সেই কাজ, বাজারে কাঁঠাল পাতা বিক্রি শুরু করেন তারা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। ভাগ্য ফিরেছে, সচ্ছলতা এসেছে সংসারে।
কাঁঠাল পাতা বিক্রির টাকা দিয়ে তাদের সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনা চলছে।
দিনাজপুর শহরের টিঅ্যান্ডটি গেট সংলগ্ন এলাকায় কাঁঠালের পাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মনসুরা ও আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে এভাবেই নিজেদের ভাগ্যবদলের গল্প শোনান।
মনসুরা বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমার স্বামী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অন্যের কাঁঠাল গাছ থেকে পাতা কিনে আনেন। এরপর আমরা দু’জনে মিলে ১০ ও ২০ টাকার আঁটি বেঁধে বিক্রির জন্য তৈরি করি। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমরা কাঁঠালের পাতা বিক্রি করছি। বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ আমাদের কাছ থেকে ছাগলের জন্য পাতা কেনেন।
তিনি আরো বলেন, কাঁঠালের পাতা বিক্রি করে দিনে কমপক্ষে ৭০০ টাকা আয় হয়। এ দিয়ে সংসার খুব সহজেই চলে যায়।
কাঁঠালের পাতা কিনতে আসা শহরের উপকণ্ঠ রামনগর মদিনা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ও সেন্টফিলিপস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল গালিব বাংলানিউজকে বলেন, বাড়িতে দু’টি ছাগল আছে। ছাগলের প্রিয় খাদ্য কাঁঠালের পাতা। শহরের অন্যান্য স্থানে পাতা পাওয়া গেলেও এখানে কম দামে টাটকা পাতা পাওয়া যায়। তাই এখান থেকেই পাতা কিনি।
মনসুরা-আব্দুল মান্নানের মতো টিঅ্যান্ডটি গেট এলাকায় কাঁঠালের পাতা বিক্রি করে অনেক নারী-পুরুষই জীবিকা নির্বাহ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৬
এনটি/এসআই