ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন সড়কগুলোতে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। সুয়ারেজ লাইন, টেলিফোন, গ্যাস লাইন সংস্কারসহ বিভিন্ন কারণে চলছে এ খোঁড়াখুঁড়ি।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, কাকলী-বনানীতে গত ১৫ দিন ধরে কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। কিন্তু সড়কের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নিত্যদিনই দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। জনদুর্ভোগ বেড়ে চললেও সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) বনানী এলাকায় সরেজমিন ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে দুর্ভোগের এমন চিত্রই দেখা গেলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের একপাশে রাস্তা খুঁড়ে সুয়ারেজ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে অপরপাশের কাজ। সৈনিক ক্লাব ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে কাকলী ফুটওভার ব্রিজের নিচ পর্যন্ত ফুটপাত প্রায় পুরোটাই খোঁড়া হয়েছে। ফুটপাতের খানিক দূরে দূরেই রয়েছে ইট, বালুসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর স্তুপ।
এভাবে দখল হয়ে আছে অর্ধেকের বেশি রাস্তা। ফলে রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এই সড়ক দিয়ে যানচলাচল তো দূরের কথা হাঁটতেই পারছেন না পথচারীরা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা শহরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এ আর নতুন কি? যখন যেভাবে খুশি রাস্তা খোঁড়া শুরু করে। জনসাধারণের দুর্ভোগ কতটুকু হচ্ছে-সে বিষয়ে কারো নজর নেই।
‘রাস্তা খুঁড়ে রেখে দিলে আমরা কিভাবে চলাফেরা করব সেটা কেউ ভাবে না। ’
ফুটপাতের পাশেই ফখরুদ্দিন অটোমোবাইল দোকানের সামনে কাজ চলছে। দীর্ঘ এ সংস্কার কাজে বিরক্ত সড়কের পাশের দোকানিরাও।
ওই দোকানের কর্মচারী জসীম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রায় ১৫দিন ধরে এ কাজ চলছে। অথচ নিয়মিত কাজ চললে এখন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। ’
‘ফুটপাত খুঁড়ে সুয়ারেজ লাইনের কাজ হলেও সারা ফুটপাতের ম্যানহোলগুলো খোলা অবস্থায় রাখা থাকে সবসময়। এর মাঝ দিয়েই জনসাধারণ হেঁটে চলাচল করে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে। ’
সংস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মো. রুবেল জানান, কাকলী-বনানী সড়কের দুই সেতুর মাঝের অংশের সড়কে সুয়ারেজ লাইনের মেরামত কাজ হচ্ছে। বর্তমানে শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।
এদিকে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সমস্যার কথা জানিয়েছে দুর্ভোগে পড়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগও। রাস্তা সরু হয়ে যাওয়া, রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাফেরা বা মানুষজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করার ফলে আলাদা জটলাও সৃষ্টি হয়।
ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, মহাখালী, চেয়ারম্যানবাড়ি, বনানীনহ গুলশানের বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। রাস্তার ডিভাইডার উন্নয়নের কাজও চলছে।
‘এজন্য স্বাভাবিক যান চলাচলের তো বিঘ্নিত হচ্ছেই। দেখা গেছে যেদিক দিয়ে গাড়ি টার্ন নিবে সেদিকে নিতে পারছে না। সব গাড়ি একদিক দিয়ে টার্ন নিতে গেলে চাপ বেড়ে যায়। ’
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কাজের কারণে যানজট হচ্ছে, অথচ জনগণ দুষছেন ট্রাফিক পুলিশকে। কিন্তু আমরা যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ’
জনদুর্ভোগ এড়াতে সব বিভাগকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ব্যস্ততম সড়কগুলোতে রাতে রাতে উন্নয়ন বা সংস্কার কাজ করলে ভোগান্তি কিছুটা কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
পিএম/এমএ