ঢাকা: ‘আল্লাহ গরিব বানাইছে, অভাবের কারণে স্বামীর ভিটাটুকু বেইচা দেই। চার পোলা মাইয়ার খাবার যোগাইতে সারা দিন স্টেশনে পইড়া থাকোন লাগে।
রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পান-সিগারেট বিক্রির ফাঁকে নিজের দুঃখ-কষ্টের কথা এভাবেই বলছিলেন শিউলি ভান্ডারী।
শনিবার (১৯ লভেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে তার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। শিউলি জানান, তার স্বামী মারা গেছে ৯ বছর হয়েছে। অভাবের কারণে স্বামীর ভিটাবাড়ি বিক্রি করে তিনি এখন বাপের বাড়ি থাকেন। শিউলির আয়েই তাদের সংসার চলে।
রাতে কেন ব্যবসা করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শিউলি জানান, রাতে স্টেশনে অনেক লোক যাতায়াত করে। বিক্রি ভালো হয়। জয়দেবপুর থেকে কমলাপুর স্টেশনে ব্যবসা করতে আসেন তিনি। রাতে থাকার কোনো জায়গা না থাকায় স্টেশনেই রাত কাটান।
আট বছর ধরে ব্যবসা করছেন শিউলি। তার ব্যবসার আয় দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার খরচও চলে এই ব্যবসা থেকে। দিনে রাতে মিলিয়ে প্রায় আড়াইশো থেকে তিনশো টাকা আয় করেন বলেও জানান তিনি।
শিউলির কাছ থেকে সিগারেট ও পান কিনছিলেন মো. হানিফ নামে এক ক্রেতা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে কাপড় কিনে রাতে স্টেশনে থাকি। আর সকালে জামালপুরে যাই। কারণ রাতে যাতায়াতে ঝুঁকি থাকে।
পান-সিগারেটের দোকানি শিউলি প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, শিউলি আপা অনেক পরিশ্রম করে। আমি স্টেশনে এলেই তার দেখা পাই।
শিউলির বাবার বাড়ি গাজীপুরের জয়দেবপুরে। তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে শিউলির। চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে বর্তমানে বাবার বাড়িতেই থাকছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
আরএটি/এমজেএফ