ঢাকা: ‘ফুটপাতে হকার নেই, তাতে কি খোঁড়াখুঁড়ির যন্ত্রণায় তো হাঁটাও যায় না। আগে জানতাম বর্ষা আসলে শুধু খোঁড়াখুঁড়ি হয়, এখন দেখি সারা বছরেই খোঁড়াখুঁড়ি।
সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও বিটিআরসি’র লোকজনের খোঁড়াখুঁড়ির উপর বিরক্ত হয়ে কথাগুলো বলেন গুলশান-২ এর বাসিন্দা আরিফুল হক।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান ঘুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বিআরটিসি ও ওয়াসার বিভিন্ন খোঁড়াখুঁড়ির চিত্র দেখা যায়। কোথাও সুয়ারেজ লাইন, কোথাও পানির লাইন আবার কোনো কোনো স্থানে টেলিফোন ও ইন্টারনেট লাইনের কাজ চলছে। এতে করে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।
সরজমিনে দেখা যায়, গুলশান-২ থেকে গুলশান-১ যাওয়ার সড়কটি খোঁড়াখুঁড়ির কারণে বেহাল অবস্থা হয়েছে। এর সঙ্গে রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং। এতে করে সড়কটি অনেকটাই সরু গলিতে রুপান্তরিত হয়েছে। এই কারণে গুলশান-১ ও ২ এর মোড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পড়ছে কাকলী-মহাখালী ও বাড্ডা লিংক রোডে।
গুলশান-২ এর ৫৪ নম্বর ও ৭১ নম্বর সড়কে ড্রেন মেরামত করতে দেখা গেলো সিটি করপোরেশনের লোকদের। কাজের কারণে ৫৪ নম্বর সড়কে গাড়ি চলাচল ও পার্কিং নিষেধ করা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে এ এলাকার বাসিন্দারা।
দুই হাত ভরে বাজার থেকে বাজার কিনে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন রশিদা রহমান।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় দুই মাস হলো রাস্তা ও ফুটপাত মেরামতের কাজ হচ্ছে। রিকশা চলতে দেয় না। বাজার নিয়ে হেঁটেই বাসা যেতে হচ্ছে।
গুলশান ৮৩ ও ৮৪ নম্বর রোডে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাত মেরামতের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ইট উঠিয়ে রাখা হয়েছে।
চিটাগাং গ্রামার স্কুলের শিক্ষক হানিফ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, অনেক দিন হলো ইটগুলো তুলে রাখা হয়েছে। এখন পযর্ন্ত ফুটপাতগুলো মেরামত করা হয়নি।
এদিকে গুলশান ১ এর ২৯,৩০,৩৮, এবং ৩৯ নম্বর সড়কেও উত্তর সিটি করোপরেশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ চলছে।
কত দিন ধরে এলাকায় কাজ চলছে জানতে চাইলে ডিএনসিসির শ্রমিক আবেদ বলেন, সঠিক বলতে পারবো না। আমি দুই মাস ধরে কাজ করছি।
গুলশান ২ নম্বরে ওয়েস্টিন হোটেলের পিছনে-সামনে বিশাল গর্ত করে টেলিফোন লাইন, রাস্তা ও ফুটপাত মেরামতের কাজ করছে সিটি করোপরেশন।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজিব বলেন, একটা কাজ তাড়াতাড়ি করলে সমস্যা নেই-কিন্তু দিনের পর দিন চললে তো সমস্যা। আমরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারছি না।
গুলশান এলাকায় এসব খোঁড়াখুঁড়ির বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন ঢাকা নগরীকে আধুনিক করার জন্য ফুটপাতগুলো নিয়ে কাজ করছে। এতে মানুষ সাময়িক ভোগান্তিতে পড়ছে-এটা ঠিক, তবে কাজগুলো হয়ে গেলে নগরবাসী এসবের সুফল পাবে। তেবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ করার চেষ্টা করছি।
গুলশান এলাকার সুয়ারেজ লাইন ও ফুটপাত ঠিক হতে আরো তিন মাসের মতো সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, ০৮ আগস্ট ২০১৬
এমসি/আরএইচএস