ঢাকা: দেশের সকল অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে ৯৮২ বর্গফুটের একটি করে ফ্ল্যাট দেবে সরকার। যেসব মুক্তিযোদ্ধার নিজের কোনো ভূমি নেই অথবা খাসজমিও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
দেশের ৪১০টি উপজেলায় ২৫ একর করে খাসজমিতে ৮০০টি পাঁচতলা ভবনে ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করে দেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রতিটি ফ্ল্যাটে থাকবে দু’টি বেডরুম, দু’টি টয়লেট ও গোসলখানাসহ আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা। চলাচলের জন্য থাকবে দু’টি করে ব্যালকনিও।
মুক্তিযোদ্ধা ভবনগুলোর চারপাশে আধুনিক নাগরিক সুবিধা থাকবে। প্রধান সড়কের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। আশেপাশে থাকবে সকালে হাঁটার রাস্তা, সড়ক বাতি ও ফুলের বাগান।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি অর্থায়নে ২ হাজার ৪৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রধান মমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা দিয়ে থাকি। তাদের মধ্যে প্রতি ২০ জনে একজন একটি করে ফ্ল্যাট পাবেন। যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তারাই মূলত ফ্ল্যাটগুলো পাবেন। এজন্য ফ্ল্যাটের সংখ্যা আগেই নির্ধারণ করা হয়নি’।
‘আমরা ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয় থেকে একটি চূড়ান্ত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) তৈরি করেছি’।
ফ্ল্যাট প্রাপ্যদের নির্বাচন ও বরাদ্দে অনিয়ম ঠেকাতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালাও তৈরি করেছে। যেসব মুক্তিযোদ্ধা অসম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত এবং অন্যের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের সবার আগে ফ্ল্যাট দেবে মন্ত্রণালয়। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, যিনি রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেননি, ফ্ল্যাট পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকেও সর্বোচ্চ বিবেচনা করবে মন্ত্রণালয়। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, যার উপার্জনক্ষম কোনো ছেলে নেই, তিনিও অগ্রাধিকার পাবেন। যিনি যুদ্ধাহত এবং বসত-ভিটায় কেবল কুঁড়েঘর তাকেও ফ্ল্যাট দেওয়া হবে।
বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রীদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীরাও অগ্রাধিকার পাবেন।
তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা পোষ্যদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এদিকে ফ্ল্যাট বরাদ্দে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে সব উপজেলায় একটি করে কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির অন্যান্য সদস্য হবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধাদের একজন প্রতিনিধি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডার। এ কমিটির প্রধান দায়িত্ব হবে প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর