খুলনা: ‘মশার কামড়ে আর বসা গেল না, কথাটাও শেষ করা গেল না, এবার উঠতে হবে। মশা তো রক্ত খেয়ে শেষ করে ফেলল!’
ভ্রু কুচকিয়ে খুলনা মহানগরীর বড়বাজারের কদমতলার ফল পট্টিতে এভাবেই মশার প্রতি ক্ষোভ ঝাড়ছিলেন ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ।
সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে ফলপট্টির একটি চায়ের দোকানে ব্যবসায়ী এক বন্ধুর সাথে চা খাওয়ার সময় তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, মশার দাপটে নগরবাসীর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মশার উপদ্রবে ফলপট্টির ব্যবসায়ীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মশা নিধন কার্যক্রম এখানে না থাকায় মশারা এখানে বাসা বেঁধেছে।
খুলনা আলিয়া মাদ্রাসার অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, কেসিসি’র ৩১ নং ওয়ার্ডে আমার বসবাস। এই ওয়ার্ডে মশা নিধনে কোনো উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম চোখে পড়ে না। মশার ওষুধ গত ৫ বছরে মেরেছে বলে আমাদের জানা নাই । বিশেষ বিশেষ কিছু এলাকায় হয়তো মারা হতে পারে কিন্তু ক্ষেত্রখালী খালপাড় এলাকায় কোনোদিন মশা মারার ওষুধ দিতে কেউ আসেনি। সন্ধ্যার পর মশার যন্ত্রণায় বসা-খাওয়া এমনি কোন কাজই করা যায় না।
মহানগরীর নিউ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, মশার উৎপাতে তিন তলা বাসায়ও যেন রেহাই নাই । সন্ধ্যা হলেই মশারা যেন দল বেঁধে মিছিল করতে করতে প্রতিটি বাড়িতে হানা দেয় । কয়েল ও স্প্রে দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাই সন্ধ্যার পর মশার কামড় থেকে রেহাই পেতে মশাড়িই শেষ ভরসা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহানগরীর অধিকাংশ ড্রেন ও জলাশয় এবং বাজার এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে মশা উড়ছে। এ সব মশা সন্ধ্যার সাথে সাথে দখল করে নিচ্ছে সব বাড়ি-ঘর। মশার পোঁ পোঁ সঙ্গীত আর রক্তাক্ত কামড়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে।
সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নগরীতে মশা নিধন কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনার কথা থাকলেও তা নিয়মিত হয় না বলে নগরবাসী অভিযোগ করেন।
তাদের অভিযোগ সিটি কর্পোরেশনের মশা নিধনের জন্য বরাদ্দ টাকার সিংহভাগই ব্যবহার করা হচ্ছে না। যে কারণে প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই বাড়ি-ঘর মশার দখলে চলে যায়। মশার উপদ্রবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু এবং বৃদ্ধরা। ফলে মশার কামড়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগতে হচ্ছে।
সিটি কর্পোরেশনের কনজারভেন্সি অফিসার আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কথা বলতে পারছি না। আমাদের বসের সাথে কথা বলেন।
কেসিসির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনিছুর রহমান বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে আছি। এ বিষয়ে এখন বলতে পারছি না।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৬
এমআরএম/এমজেএফ