কুষ্টিয়া: মুরসালিন হোসেনের জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। তবুও হাল ছাড়েনি সে।
চলতি বছর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে মুরসালিন। এতে পা দিয়ে লিখছে সে।
উপজেলার দৌলতপুর ইউপির দৌলতখালী বড়ভুইপাড়া ব্র্যাক স্কুল থেকে সে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
দৌলতখালী চোহদ্দিপাড়া গ্রামের দিনমজুর মিজানুর রহমানের ছেলে মুরসালিন। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। কিন্তু অভাব-অনটনের সংসারে শুরুতে বাবা-মা তাকে পড়াশোনা করাতে সাহস করেননি।
পরে ছেলের পড়ালেখার আগ্রহ দেখে বাড়ি সংলগ্ন ব্র্যাক স্কুলে তাকে ভর্তি করিয়ে দেন তারা।
বড়ভুইপাড়া ব্র্যাক স্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া খাতুন বাংলানিউজকে জানান, মুরসালিনের লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। তার স্বরণশক্তি ভাল ও পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী।
মুরসালিনের মা হিরা খাতুন জানান, বহুকষ্টে তাকে লালন-পালন করছেন তারা। হাঁটা-চলা ছাড়া ছেলের সব কাজেই তাকে সাহায্য করতে হয়।
তিনি আরো জানান, অভাবের সংসারে দু-বেলা দু-মঠো ভাত যোগাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই ছেলের লেখাপড়ার খরচ ও জামা-কাপড় ঠিকমতো দিতে পারেন না। আবার ছেলের লেখাপড়ার ইচ্ছাকেও বাদ দিতে পারছেন না। কিন্তু ভবিষ্যতে কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
মুরসালিন জানায়, তার পরীক্ষা ভাল হচ্ছে। ফলাফল ভালো হবে বলেও প্রত্যাশা তার।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নুল আবেদিন জানান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যে সুবিধা দেওয়া হয়, মুরসালিনকেও সেভাবেই দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
এসআর