ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোতে ৮০০ কোটি টাকার অনিয়ম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোতে ৮০০ কোটি টাকার অনিয়ম

রাষ্ট্রায়ত্ব ৮টি ব্যাংকে আবারও ৮০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। এ নিয়ে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ব ৮টি ব্যাংকে আবারও ৮০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। এ নিয়ে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।


 
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় উপস্থাপিত এক নীরিক্ষা প্রতিবেদনে এসব অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলাম, মো. আব্দুস শহীদ, মো. মোসলেম উদ্দিন, পঞ্চানন বিশ্বাস, মো. রুস্তম আলী ফরাজী, মো. শামসুল হক টুকু এবং মইন উদ্দীন খান বাদল বৈঠকে অংশ নেন।
 
সিএন্ডএজি মাসুদ আহমেদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকবৃন্দসহ  মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা, অডিট অফিসের কর্মকর্তারা এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
 
প্রতিবেদনে উল্লেখিত অনিয়মের ফিরিস্তি দেখে কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে কী অনিয়ম হয়নি তাই জানতে চেয়েছেন অডিট অফিসের কাছে।
 
কমিটিতে উত্থাপিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ফোর্সড পিএডি সৃষ্টি, জামানতবিহীন প্রকল্প গ্রহণ, সীমাতিরিক্ত ঋণপত্রের দায়সহ মালিকানা পরিবর্তনের নামে ব্যাংকের দায় বৃদ্ধিসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে এই টাকা নয়-ছয় করা হয়েছে।
 
কমিটিতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনের তথ্যমতে, অনিয়ম হওয়া ব্যাংকগুলো হচ্ছে- জনতা ব্যাংক লিমিটেড, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রুপালী ব্যাংক লিমিটেড, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি, বেসিক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লি লিমিটেড। ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরের হিসেবের উপর করা বার্ষিক এই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ৪৫টি আপত্তির সঙ্গে জড়িত টাকার পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭৯৬ কোটি ৮ লাখ ৭২ হাজার ২১৫ টাকা।

প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর যেসব অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- কনসোর্টিয়ামভুক্ত ব্যাংকের নিকট হতে টাকা আদায় না করা, ফোর্সড পিএডি সৃষ্টির মাধ্যমে অতিরিক্ত বিনিয়োগ, অসমাপ্ত প্রকল্প গ্রহণ, সীমাতিরিক্ত ঋণপত্রের দায়সহ মালিকানা পরিবর্তনের নামে ব্যাংকের দায় বৃদ্ধি, মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ও অন্য ব্যাংকের দায় গ্রহণের শর্তাদি বাস্তবায়নের পূর্বেই প্রকল্প ঋণ বিতরণ এবং পর্যাপ্ত জামানতবিহীন প্রকল্প গ্রহণ।
 
এছাড়া ফোর্সড পিএডি খাতের শ্রেণীকৃত দায় আদায় না করা, প্রকল্পে বিনিয়োগকৃত ঋণ একাধিকবার পুনঃতফসিল করেও আদায় না করা, বিতর্কিত সম্পত্তির বিপরীতে প্রকল্প ও সিসি ঋণ মঞ্জুরী পরবর্তিতে পুনঃতফসিল করেও গ্রাহক কোন প্রকার ট্রানজেকশন না করা, প্রকল্প ঋণ মঞ্জুরের শর্ত ভঙ্গ করা, নিয়মিত তদারকির অভাব ও আদায়জনিত ব্যর্থতা, অনাদায়ী টাকা আদায়ে ব্যাংক কর্তৃক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা, প্রকল্প বন্ধ, লিম ও প্লেজ গোডাউনের মালামাল অবৈধভাবে গ্রাহক কর্তৃক  অপসারণ এবং অর্পিত সম্পত্তি বন্ধক রেখে অনুমোদিত ব্যাক টু ব্যাক এলসির মূল্য পরিশোধে পিএডি খাতের দায় সৃষ্টির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনাদায়ী টাকা আদায়ের ব্যবস্থা, দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, দায়েরকৃত মামলার তদারকি জোরদার এবং একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া তাগিদ দিয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।