ঢাকা: সাধারণ নারী তো যৌন হয়রানির শিকার হনই, পুলিশে কর্মরত নারীরাও যৌন হয়রানির শিকার হন। গবেষণা শেষে এ কথা জানিয়েছে কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ (সিএইচআরআই)।
তাদের পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশে কর্মরত ১০ শতাংশ নারী কনস্টেবল, ৩ শতাংশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) যৌন হয়রানির শিকার হন। এছাড়া ক্যাডার পর্যায়ে নারী পুলিশও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও সিএইচআরআই’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সমতার কঠিন পথে বাংলাদেশের নারী পুলিশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিকাংশ নারী পুলিশ অফিসে ও অফিসের বাইরে সমানভাবে কাজ করতে চান। নারী পুরুষ একসঙ্গে কাজ করতে চান। নারীদের জন্য আলাদা একটি থানা তারা চান না। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেননি অধিকাংশ নারী পুলিশই। যদিও নারী পুলিশদের প্রায় সকলেই মনে করেন পুলিশ বিভাগটি কাজের জন্য বেশ ভালো জায়গা। তবে সিনিয়র পদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব এখনও অনেক কম। নেতৃত্ব ও মাঠ পর্যায়ের প্র্যাকটিক্যাল কাজ থেকে তাদের দূরে রাখা হয়।
নারী পুলিশদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী পুলিশ সদস্যদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে পুরুষ সহকর্মী ও কর্মকর্তারা সচেতন ও সংবেদনশীল নন। নারী পুলিশদের জন্য আলাদা টয়লেট, বিশ্রাম কক্ষ, পোষাক পরিবর্তনের কক্ষ, শিশুসেবা কেন্দ্রের মতো অবকাঠামো সুবিধা থাকা উচিৎ। প্রজনন সংক্রান্ত ও মাতৃত্বকালীন বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে।
প্রতিবেদনে পুলিশ বিভাগে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ জেন্ডার নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।
সিএইচআরআই’র পরিচালক মায়া দারুওয়ালা বলেন, নারী পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি তাঁদের প্রয়োজনীয় যাতায়াত-সুবিধা, মাতৃত্বকালীন সেবা নিশ্চিত করা এবং যৌন হয়রানির বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
পুলিশ বিভাগে নারী-পুরুষের সমতা বিধান করা হলে সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতিসংঘের নারী বিষয়ক আঞ্চলিক প্রতিনিধি ক্রিস্টিন হান্টার বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা দূর করার বিষয়ে বিশ্ব একমত হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়নে পিছিয়ে আছে।
তিনি বলেন, ১০ শতাংশ নারী সহিংসতার শিকার হন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
এমইউএম/এইচএ/