ঢাকা: মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) বার্ন ইউনিটের পরিস্থিতি ছিল অন্যদিনগুলোর মতোই। প্রতিদিনকার মতোই কিছু রোগী আর স্বজনদের আসা যাওয়া।
দ্রুত তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে একজন ব্রাদার ও ওয়ার্ড বয় এগিয়ে আসেন। এর মধ্যেই আরও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স আসতে থাকে। নামতে থাকে দগ্ধ নারীদের সারি। যাদের বেশিরভাগই বয়সে কিশোরী।
রাত সাড়ে আটটার মধ্যে একে একে ২১ জন কিশোরীর দগ্ধ দেহ ভর্তি হয় বার্ন ইউনিটে। একুশজন নারীর আর্তনাদে ভারি হয়ে আসে পুরো ঢামেক। যন্ত্রণায় কাতর অগ্নিদগ্ধরা, তাদের চিৎকার আমাদের বাঁচান, জ্বলে যাচ্ছে...। এমনই ছিল তাদের হাহাকার।
বার্ন ইউনিটের ৫ম থেকে নিচতলার সব চিকিৎসক চিৎকারে ছুটে আসেন এ সময়। ঢামেকের আনসার, পুলিশ, স্টাফরা সবাই ছুটে আসেন।
ভর্তি হওয়া সবার মুখমণ্ডল পুড়ে গেছে। দগ্ধদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই হতদরিদ্র। এই লাইটার কোম্পানিতে আড়াই থেকে ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি তাদের।
চিকিৎসকের নির্দেশে দগ্ধ স্থানগুলোতে সিল্ক ক্রিম ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। সবাইকে অবজারবেশন ওয়ার্ডে নেওয়া হয় প্রথমে। এরপর অবস্থা বুঝে পোস্ট অপারেটিভ, এইচডিইউ এবং আইসিইউতে রাখা হয়।
রোগীদের বিষয়ে বার্ন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেন, ২১ জনেরই শ্বাসনালীতে গভীর পোড়া। ফলে অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ১৭ শতাংশ বার্ন হয়েছে। যদিও কঠিন, তবে যথাসাধ্য চিকিৎসায় তাদের ভালো করে তোলার চেষ্টা অব্যাহত বলে জানান এই চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:
***‘আশুলিয়ায় দগ্ধদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক’
** আশুলিয়ায় দগ্ধ ২০ জন ঢামেকের বার্ন ইউনিটে
** আশুলিয়ায় দগ্ধদের মধ্যে ৫ জন এনাম মেডিকেলে ভর্তি
** আশুলিয়ায় দগ্ধদের চিকিৎসার্থে ১ লাখ টাকা অনুদান
** আশুলিয়ায় গ্যাস লাইটার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
** আশুলিয়ায় গ্যাস লাইটার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত ৩৯
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
এজেডএস/এমএন/আইএ