খুলনা: খুলনায় পৈশাচিক নির্যাতনে নিহত শিশু রাকিবের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ শতক খাস জমির (বাড়ি করার উপযুক্ত) দলিল দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে রাকিবের বাবা নূরুল আলম এবং মা শাহনাজ পারভীন লাকীর হাতে এ জমির দলিল তুলে দেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ।
এ সময় খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মনিরুজ্জামান, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মো. কামরুজ্জামান এবং বটিয়াঘাটা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুষার কুমার পাল উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসনের সূত্র জানায়, বরাদ্দকৃত জমিটি খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলা সংলগ্ন ২ নম্বর রাজবাঁধ মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ৩৬৮৯ নম্বর দাগে অবস্থিত।
জমিপ্রাপ্তিতে রাকিবের মা শাহনাজ পারভীন লাকী বাংলানিউজকে বলেন, “আমাগে মাথা গোঁজার জায়গা ছিলো না। এবার তা হইলো। যারা আমাগে জায়গার ব্যবস্থা করিছে। তাগে সবার জন্যি দোয়া করি। ”
২০১৫ সালের ৩ আগস্ট মহানগরীর টুটুপাড়া কবরখানা মোড়ের মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়ার কমপ্রেসার মেশিনের মাধ্যমে মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় রাকিবকে (১২)।
পরদিন ৪ আগস্ট রাকিবের বাবা নূরুল আলম বাদী হয়ে শরীফ, শরীফের সহযোগী মিন্টু খান ও মিন্টুর মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২৫ আগস্ট এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী মোস্তাক আহমেদ এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৬ সেপ্টেম্বর খুলনা মহানগর হাকিম আদালত বিচার কাজ শুরুর জন্য মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান। মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা ১ অক্টোবর দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি বিচারের জন্য আমলে নেন। এর মধ্য দিয়ে পৈশাচিক ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়।
৫ অক্টোবর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। ১১ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মামলার ৩৮ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ২৮ অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বক্তব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
১ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হওয়ার পর ৮ নভেম্বর মামলার রায়ের দিন ধার্য করেন বিচারক। রায়ে আসামি শরিফ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও বিউটি বেগমকে খালাস দেন আদালতের বিচারক।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
এমআরএম/এইচএ/