ঢাকা: জুরাইন কবরস্থান। ভেতরে প্রবেশ করে কিছুটা সামনে এগিয়ে ডানদিকে তাকালেই চোখে পড়ে সারিবদ্ধ কবর।
তবে কবরগুলোর সামনে সম্ভাব্য পরিচয় দেওয়া আছে। প্রথমটির পরিচয়ে নাম দেওয়া সাদেকুল ইসলাম, দ্বিতীয়টি পাপিয়া, তৃতীয়টি আসমা নামক কোনো এক হতভাগ্য শ্রমিকের কবর। যেন নিভৃতে ঘুমিয়ে তারা।
তাজরিন অগ্নিকাণ্ডের চতুর্থবার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ভোর থেকেই বিভিন্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা আসেন জুরাইন কবরস্থানে। সকাল সাড়ে আটটায় কবরস্থানে শ্রমিকদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা জানায় গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে তাজরীনের মালিক দেলোয়ার হোসেনের ফাঁসি দাবি করেন শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার। তিনি বলেন, শ্রমিকরা অপরাধ করলে বিচার হয়। কিন্তু মালিকরা অপরাধ করলে তার বিচার হয় না। কারণ বেশিরভাগ মালিকই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে তাদের বিচার হয় না।
এ সময় শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ বলেন, সরকার তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের হত্যার বিষয়ে তেমন জোর দিচ্ছে না। তাজরীনের মালিকের ফাঁসি নিশ্চিত করা সরকারেরই দায়িত্ব। এই ‘হত্যাকাণ্ডের’ বিচার করে সরকারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের শ্রদ্ধা জানানোর পর বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন তাজরীনের নিহতদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
২০১২ সালের এইদিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে এক ন্যাক্কারজনক অধ্যায়ের জন্ম হয়। ওইদিন তাজরীন ফ্যাশন নামক পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১৩ জন শ্রমিক জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন ১০৪ জন শ্রমিক।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
ইউএম/জেডএস