ঢাকা: নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর ফের গোপনে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের কার্যক্রমে ফের তোড়জোড় করেছে সংগঠনের সদস্যরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিষিদ্ধ এ সংগঠনের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বা যানবাহনে লিফলেট বিতরণসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। পাশাপাশি সংগঠনের জন্য কর্মী সংগ্রহেরও কাজ চালানো হচ্ছে।
পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং জনসমাগমে সংগঠনের কর্মীরা তাদের লিফলেট বিতরণ করে জনমনে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছে।
তাদের সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ারও চেষ্টা চলছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সংগঠনের বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে তারা।
গত ২০ নভেম্বর (রোববার) সন্ধ্যায় শাহবাগ এলাকায় যানজটে আটকা বিভিন্ন যানবাহনে লিফলেট বিতরণ করেন কয়েকজন তরুণ। সংগঠনের লিফলেট ছুড়ে দিয়ে নিমিশেই তারা মিশে যাচ্ছেন মানুষের ভিড়ে।
এছাড়া ২২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় রাজধানীর লিফলেট বিতরণকালে বেসরকারি নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালযের সামনে থেকে হিজবুত তাহরীরের এক সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
মো. ফাহিমিদুর রহমান (২৫) নামে ওই তরুণের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ লিফলেটও জব্দ করা হয়।
এছাড়া চলতি বছরের ১৯ আগস্ট রাজধানীর গেণ্ডারিয়া এলাকা থেকে হাফিজ ও জাহিদ নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। লিফলেট বিতরণের সময় তাদের আটক করা হয়।
আটকদের মধ্যে হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহিদ ঢাকা কলেজের ছাত্র বলে জানায় পুলিশ।
এর আগে, ০৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুর টোলারবাগ থেকে হিজবুত তাহরীরের সদস্য সন্দেহে ফাইদুর রহমানকে (৩৬) আটক করা হয়।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণার মাধ্যমে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন ফাহিম।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সংগঠনটি নিষিদ্ধ থাকলেও গোপনে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গোপনে বিভিন্ন প্রেস থেকে লিফলেটগুলো ছাপানো হচ্ছে। আমরা সেগুলোতে অভিযান চালাচ্ছি।
‘হিজবুত তাহরীর সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ রাজধানী জুড়েই নজরদারি করছে। প্রচারণার সময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ’
এদিকে গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয় এ সংগঠনের অনেকে সদস্য।
সংগঠনটির বেশিরভাগ সদস্যই উচ্চশিক্ষিত ও স্বচ্ছল পরিবারের তরুণ। যাদের অনেকেই পরবর্তীতে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দিয়ে বিভিন্ন হামলাও সংগঠিত করেছে বলে জানায় সূত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
এসজেএ/এমএ/