ঢাকা: রাজবাড়ী সদর উপজেলার গুপ্তমানিক গ্রামের ১১ বছরের শিশু মো. রাব্বি হত্যা মামলার আসামিরা গত পাঁচ মাসেও গ্রেফতার হয়নি। এমনকি রাব্বির ময়না তদন্তের রিপোর্ট বার বার চাওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত থানা পুলিশ দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের মামা মো. খোকন।
মৃত সোহেলের ছেলে পিতৃহীন রাব্বির মা হাছিনা বেগম সৌদি প্রবাসী। সে তার নানা গুপ্তমানিক গ্রামের মো. মোহন মল্লিকের বাড়িতে থেকে লালিত-পালিত হচ্ছিল।
গত ২২ জুলাই সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিল রাব্বি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর গত ২৫ জুলাই ভোরে এলাকার কাশেম পাটোয়ারীর মজা পুকুরের পানিতে পাটের জাগের ভেতরে তার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়।
মামলার বাদী রাব্বির নানা মো. মোহন মল্লিক মামলার এজাহারে অভিযোগ করেছেন, পূর্ববিরোধের জেরে পার্শ্ববর্তী মরডাঙ্গা গ্রামের রিয়াজ ও শাকিল অন্য কয়েকজনকে নিয়ে তার নাতিকে হত্যা করে পাটের জাগের ভেতরে ফেলে রাখে।
লিখিত আবেদনপত্রে মামা খোকন অভিযোগ করেন, গত ৬ জুলাই ঈদ-উল ফেতরের দিনগত রাতে এলাকার আন্দার মানিক উচ্চ বিদ্যালয়ে কনসার্ট চলাকালে রিয়াজ ও শাকিল স্কুলের তালা ভেঙ্গে ক্লাসরুমে প্রবেশ করে। তার ভাগ্নে রাব্বি ব্যাপারটি প্রধান শিক্ষককে জানায়। ফলে প্রধান শিক্ষক তাদের অনেক বকাঝকা করেন। সেই আক্রোশেই রাব্বিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে রিয়াজ ও শাকিল।
নানা মো. মোহন মল্লিকের অভিযোগ, রাব্বি নিখোঁজ হওয়ার দিন বিকেলে বাড়ির পাশের তার চা-পানের দোকানে কেরাম খেলা নিয়ে তর্কাতর্কি ও রাব্বিকে মারধর করে রিয়াজ ও শাকিল। রাব্বির চিৎকারে লোকজন চলে এলে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। আর ওইদিনই সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ হয় তার নাতি।
খোকন আরও অভিযোগ করেছেন, রাব্বির মরদেহ পাওয়ার খবর ছড়ানোর পর থেকেই গাঢাকা দিয়েছে রিয়াজ ও শাকিল। এতে এলাকার সকলে তাদেরকে সন্দেহ করেন। এরপর রিয়াজের বাবা মো. শাহিনুর বেপারি ও শাকিলের বাবা মো. আনোয়ার গাজীও লাপাত্তা হয়ে যান। এর কয়েকদিন পরে মো. বিল্লাল পাটোয়ারী, মো. সোহেল, মো. রনি, মো.শরিফ ও মো. নাহিদ মোল্লাও নিখোঁজ হন। ।
খোকনের অভিযোগ, ঘটনার পর তার বাবা মো. মোহন মল্লিক বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৩২/২৪৮ তাং ২৫-০৭-২০১৬ ইং)। কিন্তু এখন পর্যন্ত রিয়াজ ও শাকিলসহ আসামিদের কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এমনকি বার বার চাওয়ার পরেও রাব্বির ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেয়নি।
রাব্বিকে নৃশংসভাবে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন নানা ও মামাসহ স্বজনেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
এএসআর