খুলনা: ‘দশ মাস আগে হঠ্যাৎ করে আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। খাইয়া না খাইয়া দিন চলে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এভাবে বলতে লাগলেন ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সত্তরোর্ধ্ব এক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন।
তিনি খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের ১০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে বেশ ভালোই দিন কাটছিল তার। হঠাৎ করে ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে তার ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
কথা বলার সময় ফাইল থেকে বারবার বের করছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সনদ। সাথে আওয়ামী লীগের টিকিট। এক এক করে দেখাতে শুরু করলেন মুক্তির বার্তায় তার নাম, গেজেট নম্বর। একবার ফটোকপি, আরেকবার আসল কপি। সাথে আছে ২০১৬ সালের ২০ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবর করা আবেদনপত্রটি। যে আবেদনে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অনেকের সুপারিশ। যদিও জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে দেখার কথা বললেও কোথাও ঠাঁই মিলছে না মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের। তার বিশ্বাস ২০ হাজার টাকা জোগাড় করতে পারলে আবার গেজেটে ফিরে আসবে তার নাম। পাবেন আবারও মুক্তিযুদ্ধোর জন্য সরকারের দেওয়া ভাতা। বারবার চোখ ভিজে উঠছিল বাতেনের। কী করবেন বাতেন? বুঝে উঠতে পারছেন না।
জেলা প্রশাসকের কাছে যে আবেদনটি তিনি দিয়েছিলেন তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯নং সেক্টরে মেজর জলিলের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছেন। গেজেট নং ১২৮৫, মুক্তিবার্তা নং-০২০৪৯৩০১৫।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্রনাথ সেন বাংলানিউজকে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দিয়ে রাজাকারের নাম অন্তর্ভুক্ত করা ঘৃণ্য ও অপমানের।
অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের ভাতা পুনরায় চালুর দাবি জানান মহেন্দ্রনাথ।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৬
এমআরএম/এমজেএফ