ঢাকা: চুক্তিভিত্তিক কাজের বকেয়া টাকা ফেরত পেতেই কোম্পানির মালিক ওয়াং মিং চি ও তার স্ত্রী লু লি হুয়া’র ওপর হামলা ও হত্যার চেষ্টা চালায় গ্রেফতারকৃত আসামিরা। একাধিকবার তার বাসায় ডাকাতির পরিকল্পনাও করেছিলো তারা।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ।
এর আগে, রাজধানীর উত্তরায় তাইওয়ানের নাগরিকের ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. সাজু মিয়া (২৮), লাজু মিয়া (৩০), জাহাঙ্গীর (৪০), মো. এবায়দুল হক ওরফে স্বপন (২৪) ও গৃহকর্মী হালিমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, জিন জিন ইয়াং নামে প্লাস্টিক কারখানার মালিক ওয়াং মিং চি ও তার স্ত্রী লু লি হুয়া’র ওপর হামলা করেছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন আটকরা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল চুক্তিভিত্তিক বকেয়া ছয় লাখ টাকা ফেরত পাওয়া। তবে সেই টাকা ফেরত না পেয়েই নিজ মালিকের ওই বাসায় ডাকাতি করে নগদ অর্থ লুট করেন তারা।
তিনি বলেন, তাইওয়ানি দম্পতি গাজীপুরের জয়দেবপুরে বড়গাছা এলাকায় পিভিসি ডোর ও সিলিং তৈরির জিন জিং ইয়াং ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড নামে প্লাস্টিক কারখানার মালিক। তারা ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস করে আসছিলেন। উত্তরার ৪ নং সেক্টরের ১৪/এ এর ৮ নং বাড়িতে বসবাস করতেন এ দম্পতি।
মালিক ওয়াং মিং চি চুক্তিভিত্তিকভাবে কোম্পানির কিছু কাজ সাজু ও লাজুকে দেয়। ওই কাজের ছয় লাখ টাকা বকেয়া থাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। টাকা ফেরত না পেয়ে সাজু ও লাজু ওয়াং মিং চি-এর ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন বলেও জানান তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এক বছর আগে ওয়াং মিং চি’র উত্তরার বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে হালিমাকে নিয়োগ দেন পরিকল্পনাকারী সাজু। এরপর থেকে হালিমার মাধ্যমেই সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে থাকে সাজু। কয়েকবার খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে টাকা ও মূল্যবান সম্পদ চুরি করার চেষ্টা চালায়। এ জন্য ওই বাড়ির নকল চাবিও বানায় তারা।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক আরও বলেন, তাইওয়ানি দম্পতির বাসায় বেশ কিছু টাকা আছে, গৃহকর্মীর এমন তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ৫ নভেম্বর মালিকের বাসায় তারা প্রবেশ করে হত্যা চেষ্টা চালায়। ওই দিন হালিমা ঘুমের ওষুধ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়, এতে বেল চাপতেই দরজা খোলেন ওয়াং মিং চি। ভেতরে ঢুকতেই ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। কাঠের লাঠি দিয়ে সাজু ও লাজু আঘাত করলে ওয়াং মিং চি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর স্ত্রী লু লি হুয়াকে মারধর করে নগদ ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে এখনও পর্যন্ত মালিক ওয়াং মিং চি তাইওয়ানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বর্তমানে কোমায় রয়েছেন।
দীর্ঘদিন ছায়া তদন্ত শেষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
** তাইওয়ানের নাগরিক হত্যা চেষ্টার ঘটনায় গ্রেফতার ৪
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৬
এসজেএ/এমজেএফ