ঢাকা: স্মার্টফোন অ্যাপভিত্তিক যেসব প্রতিষ্ঠান ট্যাক্সি ও মোটরবাইক সেবা দিতে চায় তাদের সঙ্গে বসতে চায় বিআরটিএ। তবে চিঠি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছে না সংস্থাটি।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) নুরুল ইসলাম জানান, প্রযু্ক্তির সেবাকে তারা স্বাগত জানাতে চান। কিন্তু কেউ এরকম সেবা চালু করা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেননি।
এ বিষয়ে রাতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের একান্ত সূত্র জানায়, এরকম সেবার ক্ষেত্রে বিআরটিএ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। বিআরটিএর কাছে সেবার পদ্ধতিগুলো উপস্থাপন করলে বিআরটিএ সিদ্ধান্ত দেবে।
এদিকে, শনিবার সকালে বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাম্পেইনে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী। সেখানেও নতুন ট্যাক্সি সেবার এ বিষয়টি আলোচনায় উঠতে পারে।
উবারের মতো একই আদলে ডাটাভেক্সেল নামে দেশীয় একটি কোম্পানি ‘শেয়ার এ মোটরবাইক’-স্যাম অ্যাপস তৈরি মোটরসাইকেল শেয়ারে চলাচলের পদ্ধতি বের করে।
কিন্তু এক্ষেত্রে তারাও বিআরটিএর একই রকম বিধি-নিষিধের কবলে পড়ে। এ নিয়ে ডাটাভেক্সেল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজ কাশেমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগান দিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সেবাকে বাড়াতে চাচ্ছে কিন্তু বিআরটিএর যে নিয়ম তাতে এই সেবার পথটি রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। ’
স্যাম অ্যাপস-এর উদ্যোক্তা ইমতিয়াজ বলেন, স্যাম কোন মোটরসাইকেল নতুন করে কিনে রাস্তায় নামায় নি। তাই বিআরটিএর ‘মোটরসাইকেল ভাড়ায় চলতে পারবে না’- যে নিয়ম তার ব্যত্যয় করেননি তারা। শুধু অ্যাপসের মাধ্যমে মোটরসাইকেলের সিট শেয়ার করে যাওয়ার পদ্ধতি বের করেছিলেন। কিন্তু বিআরটিএর নোটিশের কারণে তারা এখনও কার্যক্রম শুরু করতে পারছেন না।
তবে বাংলাদেশি এই অ্যাপস দিয়ে ঢাকায় শুরু করতে না পারলেও বিশ্বে যেসব দেশের শহরে মোটরসাইকেলের আধিক্য সেসব স্থানে এই অ্যাপস শিগগিরই তারা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে নেপালে তারা সেবাটি চালু করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
এছাড়া বার্মা, কম্বোডিয়া, ব্যাংকক ও ভিয়েতনামে শেয়ার এ মোটরবাইক অ্যাপস চালুর করতে যাচ্ছেন তারা।
তবে উবারের ট্যাক্সি সেবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়ও হয়েছে। সেসব দেশে বেআইনি হয়েছে কীনা জানতে চাইলে বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) বলেন, ‘পাবলিক ডিমান্ড অনুসারে যদি এরকম সেবা কেউ দিতে চায় সেক্ষেত্রে বিআরটিএর সঙ্গে বসতে হবে। তারপর বিআরটিএ’র যদি নিয়মের ত্রুটি থাকে তাহলে সেটা ঠিক করা যাবে।
স্মাটফোনে এরকম সেবাদাতাদের উদ্দেশ্য করে বাংলানিউজের মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘যদি তারা এসে কোন প্রস্তাব দেয় তাহলে আমরা বিবেচনায় নিয়ে মন্ত্রণালয়ে দিতে পারি। এরপর সংশোধন করে এরকম সেবা চালু করা যেতে পারে।
নুরুল ইসলাম বলেন, এরকম সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র সঙ্গে বসে একটি নীতিমালায় আসতে হবে। কারণ এখানে নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত।
তিনি বিআরটিএ’র আইন উল্লেখ করে বলেন, ‘কোন কোম্পানি ট্যাক্সি ক্যাব পরিচালনা করলে তাকে অবশ্যই বিআরটিএর মাধ্যমে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অনুমতি নিতে হবে। ’ এসময় তিনি বলেন, ঢাকায় তারা উবারের কোনো অফিস খুঁজে পাননি।
এ বিষয়ে স্যামের উদ্যোক্তা কাশেম জানান, সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, দুই সিটি করপোরেশনকে তারা চিঠি পর্যন্ত দিয়েছেন। চিঠিগুলো মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা গ্রহণও করেছেন। কিন্তু এখন বিআরটিএ যদি বলে ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছে না, তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হবে।
বিআরটিএ জানায়, শুধু উবার নয়, তাদের নিয়মের বাইরে ‘চলো’ নামে আরেকটি কোম্পানিও এরকম ব্যবসা করছে। এছাড়া রেন্ট এ কারগুলোও অবৈধ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
এসএ/আরএ