ঢাকা: বিদেশগামী কর্মীদের মিথ্যা আশ্বাস, চুক্তি অনুযায়ী কাজ না দেওয়া এবং অধিক টাকা গ্রহণ করলে রিক্রুটিং এজেন্সি ও মধ্যসত্ত্বভোগীদের কোনো ধরনের ছাড় না দেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
একই সঙ্গে রিক্রটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রমের প্রক্রিয়া নিয়েও জবাবদিহিতার তাগিদ দেন তারা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে ‘বিদেশে চাকরিতে নিয়োগ: সুযোগ এবং প্রতিবন্ধকতা' শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা এ অভিমত দেন।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর মাইগ্রেন্টস রাইটস ও বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি অন গ্লোবাল ফোরাম অ্যান্ড মাইগ্রেশন ডেভলপমেন্টের (জিএফএমডি) যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
এতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. সেলিম রেজা বলেন, রিক্রুটিং এজন্সিগুলো প্রতারণা ও অভিবাসন প্রক্রিয়ায় দালালদের অংশগ্রহণ কমানোর জন্য অনলাইনে কাজের ডিসেন্ট্রালাইজেশন করা হচ্ছে।
‘কুমিল্লার মানুষ কুমিল্লায় বসে বিদেশ যাওয়ার সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। কাউকে আর এ জন্যে ঢাকায় আসতে হবে না। ’
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) মহাসচিব মো. রহুল আমিন বলেন, আমাদের এখনও এনালগ রিক্রুটিং সিস্টেমে কাজ করতে হচ্ছে।
আশপাশের দেশগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখবো সেখানে কাজ হচ্ছে অনলাইনে।
‘আমাদের খুব দ্রুত অনলাইনের মাধ্যমে অভিবাসন প্রক্রিয়া করা দরকার। একই সঙ্গে বাইরের দেশগুলোতে মার্কেট সৃষ্টির জন্য ইমেজ বাড়ানোও প্রয়োজন,’ মত দেন তিনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচির প্রধান হাসান ইমাম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি একক ভিসা প্রসেস করছে। ২০১৫ সালে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৭ জন ব্যক্তিগত ভিসায় ও ৭০ হাজার ৯৭৬ জন গ্রুপ ভিসায় বিদেশে যান।
বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে ২১৩টি অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মধ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৭টি এজেন্সিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
‘পাশাপাশি বিদেশগামী কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণ হিসেবে রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে আদায় কলেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়,’ জানান হাসান ইমাম।
অভিবাসন ক্ষেত্রে দালালের উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য ই-রিক্রুটমেন্ট পদ্ধতি চালু, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে গ্রেডিংভিত্তিক করা এবং সে অনুযায়ী লাইন্সেস দেওয়া, অবৈধ নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং বৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি প্রকাশে বায়রাকে উদ্যোগী হওয়াসহ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।
হাসান ইমাম জানান, গত পাঁচ বছরে (২০১১-১৫) প্রায় ২৩৯ শতাংশ নারী অভিবাসন বেড়েছে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের উপ প্রধান কেএম আলী রেজা, মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব কাজী আবুল কামাল, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ট্রনিং স্টান্ডার্ড অ্যান্ড প্ল্যানিং বিভাগের পরিচালক ড. মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
এমসি/এমএ