ঢাকা: প্রায় এক যুগ পর অবৈধ দখলমুক্ত হলো রাজধানীর শ্যামলীর শিশু বিনোদন কেন্দ্র ‘শিশু মেলা’। বিনোদন কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং দু’টি প্রবেশপথ সিলগালা করার মাধ্যমে তা দখলমুক্ত করা হয়।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হকের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত শিশু মেলা অবৈধ দখলমুক্ত করেন। ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর-ই-মওলার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এসময় মেয়র বলেন, যারা এভাবে এতোকাল শিশু মেলা অবৈধ দখলে রেখেছিল, তাদের দুর্বৃত্ত বলা যায়। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ডিএনসিসি’র তত্ত্বাবধানে শিশু মেলা পুনরায় খুলে দেওয়া হবে এবং শিগগির রাজধানীতে আরও তিনটি পার্ক চালু করা হবে।
এছাড়া দু’বছরের মধ্যে অর্ধশত পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান আনিসুল হক।
এসময় ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরতুল্লাহ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, আইন কর্মকর্তা এসএম মাসুদুল হক, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এম সাবের সুলতান, অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম অজিয়র রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফোরকান হোসেন , মো. নূরুল ইসলাম রতন, তারেকুজ্জামান রাজিব, মো. আবুল হোসেন, মো. মোবাশ্বের চৌধুরী, মো. মফিজুর রহমান ও নারী কাউন্সিলর শামীমা রহমানসহ ডিএনসিসি’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর শ্যামলীতে মিরপুর রোড এবং আগারগাঁওমুখী সড়কের সংযোগস্থলে শিশুপার্ক নির্মাণ করে পরিচালনার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয় তৎকালীন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর ১.৪০ একর জমি হস্তান্তর করে। ২০০২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস’র কাছে নিজ খরচে আধুনিক খেলার যন্ত্রাংশ স্থাপনের শর্তে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৬ টাকা মূল্যে ৩ বছরের জন্য ইজারা দেয়।
মেয়াদ শেষে ২০০৫ সালে ইজারা নবায়নের জন্য পত্র প্রেরণ সত্ত্বেও ইজারাদার প্রতিষ্ঠান ইজারা নবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে ইজারা বাতিল করে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চতর আদালতের নিষেধাজ্ঞা (রিট পিটিশন নং-৩৪৭৯/২০০৫) থাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।
তারপর থেকে ইজারাদার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে কোনো প্রকার অর্থ দেওয়া ছাড়া এতোদিন ‘শিশু মেলা’ পরিচালনা করে আসছিল। উল্লিখিত রিট নিষ্পত্তি শেষে ২০০৯ সালে আবারও উচ্চতর আদালতে রিট পিটিশন (নং-২৯৪৬/২০০৯) দায়ের করা হয়। বিদ্যমান মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত আছে, তবে উচ্চতর আদালতের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ নেই। এ প্রেক্ষাপটে শনিবার এ দখলমুক্ত কার্যক্রম চালানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
এইচএ/