ঢাকা: বিশ্ব পানি সম্মেলনে যোগ দিতে এবং একই সঙ্গে চারদিনের দ্বি-পাক্ষিক সরকারি সফরে হাঙ্গেরির উদ্দেশে যাত্রা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হবে তিন দিনের বিশ্ব পানি সম্মেলন। জাতিসংঘ ঘোষিত পানি সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সদস্য হিসেবে এই সম্মেলনে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী আগেই জানিয়েছেন দুই দেশের সিদ্ধান্তে এরই মধ্যে শেখ হাসিনার এই সফরকে দ্বি-পক্ষিক সরকারি সফর হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট জ্যানোস আদের’র বিশেষ আমন্ত্রণেই দেশটিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট আদেরের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবানের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ-হাঙ্গেরি বাণিজ্য ও অর্থনীতি ফোরামের উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা।
এই সফরে দুই দেশের মধ্যে অন্তত চারটি সহযোগিতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। পররাষ্ট্র দফতর বিষয়ক পরামর্শ, পানি ব্যবস্থাপনা সহযোগিতা, কৃষি সহায়তা ও চেম্বার অ্যান্ড কমার্স বিষয়ক সহযোগিতার ওপর এসব স্মারক সই হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইট স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ২টায় ফেরেন্স লিৎস আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে। হাঙ্গেরির নিরাপত্তা নীতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইস্তভ এন মিকোলা, হাঙ্গেরিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর ও বাংলাদেশে নিযুক্ত হাঙ্গেরিয়ান রাষ্ট্রদূত গিউলা পেথো বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানাবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে স্ট্যাটিক গার্ড দেওয়া হবে।
ওই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার হোটেলে দেখা করবেন হাঙ্গেরি-বাংলাদেশ পার্লামেন্টেরিয়ান গ্রুপের সদস্যরা।
২৮ নভেম্বর সকালে দুই দিনব্যাপী বুদাপেস্ট ওয়াটার সামিট শুরু হলে তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। পানি সহযোগিতা, শান্তি ও উন্নয়নের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করে সব দেশের জন্য টেকসই উন্নয়নের পক্ষে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন অন্যান্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনাও টেকসই পানি সমাধান প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন।
দিনের পরের ভাগে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ড. জ্যানোস আদেরের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে বসবেন। আর সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্টের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।
পরের দিন (মঙ্গলবার) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিরোস’ স্কয়ারে যাবেন। দেশটির প্রতিষ্ঠায় প্রাণ দিয়েছেন যে জাতীয় বীর ও অজানা সৈনিকেরা- তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবানের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবে কোসুথ স্কয়ারে। সেখানে শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
এই বৈঠকের পরই দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সহযোগিতা স্মারকগুলো সই হবে। পরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে কথা বলবেন।
এই দিন হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে হাই-লেভেল ওয়াটার প্যানেলে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা আর পরে প্রেসিডেন্টের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
বিকেলে শেখ হাসিনা ও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বাংলাদেশ হাঙ্গেরি বিজনেস ফোরামের সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেখানে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) ও হাঙ্গেরিয়ান শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ সময় দুই নেতা তাদের বক্তব্য রাখবেন।
স্থানীয় সময় বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ভিভিআইপি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে বুদাপেস্ট ছাড়বে। ওই দিন বাংলাদেশের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
এমএমকে/এটি