ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মারা যাচ্ছি মা...আমারে বাঁচাও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
মারা যাচ্ছি মা...আমারে বাঁচাও ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিঁড়ি বেয়ে উঠে দ্বিতীয় তলায় ঢুকতেই হাতের বাঁপাশে ৮ নম্বর বেড থেকে কানে ভেসে আসে একটি শিশুর গোঙানির শব্দ।

ঢাকা: সিঁড়ি বেয়ে উঠে দ্বিতীয় তলায় ঢুকতেই হাতের বাঁপাশে ৮ নম্বর বেড থেকে কানে ভেসে আসে একটি শিশুর গোঙানির শব্দ। কাছে গিয়ে কান পেতে শোনা যায়, জ্বলে যাচ্ছে মা, মুখ, হাত, পা জ্বলে যাচ্ছে, সারা শরীর পুড়ে যাচ্ছে, পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে, আমি মারা যাচ্ছি মা, আমারে বাঁচাও...।



শনিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)  হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দ্বিতীয়তলায় আশুলিয়ায় গ্যাস লাইটার ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ শিশু ফারহানা আক্তার (১২) মায়ের কাছে বাঁ‍চার আকুতি জানাচ্ছিলো এভাবে। আর এই আকুতি শুনে অঝোরে কাঁদছেন মা রাশেদা বানু।
ফারহানা জানায়, তার শরীরে খুব কষ্ট, পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা। মুখ, হাত, পা জ্বলে যাচ্ছে। এছাড়া তার নিশ্বাস নিতেও খুব কষ্ট হচ্ছে।

রাশেদা বানু জানান, ঘটনার দিন তারা খবর শুনে কারখানার সামনে ফারহানাকে খুঁজতে যান। কিন্তু কারখানার কেউ ফারহানার খোঁজ দিতে পারেন না। পরে তার এক আত্নীয়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে তারা ঢামেকে আসেন। মেয়ের শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। যে কোনো মুহূর্তে মারা যেতে পারে বলে তাদের শঙ্কা রয়েছে। তাকে আইসিইউতে নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বেড ফাঁকা না পাওয়ায় আইসিইউতে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ভিটেমাটির কথা উল্লেখ করে রাশিদা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই। স্বামী রিকশা চালায়। তার আয়ে সংসার চলে। সংসারের অভাব ঘোঁচাতেই ফারহানাকে কাজে পাঠাই।
 
ফাহানার নানি আকলেমা বেগম জানান,  টাকা পয়সা নেই, থাকলে তারা ফারহানাকে বাইরে চিকিৎসা করাতেন।
 
ফারহানার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। তার বাবা আবুল কালাম একজন রিকশাচালক। ফারিয়া (১০) ও ফামিদা (০৯) নামে আরও দু’টি বোন রয়েছে।
 
গত ২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাভারের আশুলিয়া কালার ম্যাচ বিডি লিমিটেড নামে গ্যাস লাইটার কারখানার আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী আহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেকে ভর্তি হন ২০ জন। এদের মধ্যে মারা যান দু’জন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
আরএটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।