ঢাকা: মাটি লেভেলে আর কাজ নেই। যে কাজ চলছে তা ফ্লাইওভারের ওপরের অংশে।
আর জুন মাসে খুলে দেওয়া হবে রামপুরা থেকে মালিবাগ-মৌচাক হয়ে রাজারবাগ-শান্তিনগর ফ্লাইওভার।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। একই সঙ্গে যান চলাচল আর ফ্লাইওভার নির্মাণের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে দিন-রাত যে ভোগান্তি ছিলো তারও অবসান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
রোববার (২৭ নভেম্বর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাটিতে পিলার তোলার জন্য আগে যেমন খোঁড়াখুঁড়ি হতো, এখন সেই কাজ আর নেই। শুধু ওপরের কাজের জন্য জিনিসপত্র যত্রতত্র ফেলে রাখা। এ কারণে স্বাভাবিক যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। আবার ওপরে ভারি যন্ত্রপাতি তুলতে এস্কেবেটারে আনা-নেওয়ার কারণে দীর্ঘ যানজটও লাগছে।
ধুলো উড়ছে মালিবাগ রেলগেট থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত। আশেপাশে হাঁটা-চলা করা মানুষজন ‘মাস্ক’ দিয়েও এ ধুলো এড়িয়ে যেতে পারছেন না। এ পথে একটু পা বাড়ালেই গায়ের কাপড় নোংরা হয়ে যাচ্ছে- এমন অভিযোগ তাদের।
প্রকৌশলীদের তথ্য অনুসারে, সীমাহীন দুর্ভোগে ভোগার দিন শেষ হবে ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে। এর মধ্যে ফ্লাইওভারের রামপুরা থেকে মালিবাগ-মৌচাক হয়ে রাজারবাগ-শান্তিনগর অংশের সব কাজ শেষ হবে।
এখন ফ্লাইওভারটির সাতরাস্তা থেকে মগবাজার এবং বাংলামোটর থেকে মৌচাক অংশ খুলে দেওয়া আছে।
মালিবাগ-মৌচাক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মালিবাগ মোড়ের যে পাইলিং কাজ কয়েকদিন ধরে চলছিলো, সেটি শেষ করে ওপরের দিকে গার্ডার সাজাতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। একই ধরনের কাজ চলছে রামপুরা থেকে মৌচাক হয়ে রাজারবাগ এবং মালিবাগ মোড় ঘুরে শান্তিনগর পর্যন্ত পুরো অংশে।
মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার বাংলানিউজকে জানান, মাটিতে আগের মতো বড় ধরনের কাজ নেই। যা আছে তা ফ্লাইওভারে সুপারস্ট্রাকচার অংশের জন্য আনা-নেওয়া করা হয়। তখন একটু যানজট হয়। এর জন্য তাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই। রাস্তার কাজ আর যান চলাচল দু’টিই একসঙ্গে করতে হচ্ছে।
এ অংশের সবগুলো পাইলিং শেষে পিলার তোলা শেষ হয়ে গেছে। ফলে ফ্লাইওভারের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের জুনে উদ্বোধন করা যেতে পারে বলেও জানান সুশান্ত কুমার।
গত বছরের ৩০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ সমন্বিত ফ্লাইওভারটির সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি পর্যন্ত প্রথম অংশের উদ্বোধন করেন। দ্বিতীয় ধাপে ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে দু’মাস আগে।
প্রকল্প অনুসারে, তিন ধাপের ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি পর্যন্ত অংশটি মূল অংশ হিসেবে ধরা হয়।
আর শেষ ধাপে এখন রামপুরা থেকে মালিবাগ-মৌচাক হয়ে রাজারবাগ-শান্তিনগর অংশের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি থাকা ২০ শতাংশ কাজের অন্তর্গত ওপরের অংশে গার্ডার তোলা ও ফিনিশিং।
২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন। সমন্বিত এ ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২০১৪ সালের মধ্যে। পরে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তাও হয়নি। এর মধ্যে ফ্লাইওভারটির ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। ত্রুটি ধরা পড়ায় নকশায়ও আনতে হয়েছে পরিবর্তন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
এসএ/এএসআর