ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পল্টনের যানজটে ভোগান্তিতে আশেপাশের যাত্রীরাও

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
পল্টনের যানজটে ভোগান্তিতে আশেপাশের যাত্রীরাও ছবি: বাংলানিউজ

ইচ্ছেমতো সিগন্যাল ও ভিআইপিদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। নিয়ম ভঙ্গ করে যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠা-নামা করছে গণপরিবহনগুলো আর প্রতিটি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকছে রিকশা। যে যার মতো করে পার হচ্ছেন চারপাশের রাস্তা।  

ঢাকা: ইচ্ছেমতো সিগন্যাল ও ভিআইপিদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। নিয়ম ভঙ্গ করে যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠা-নামা করছে গণপরিবহনগুলো আর প্রতিটি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকছে রিকশা।

যে যার মতো করে পার হচ্ছেন চারপাশের রাস্তা।  

এসব নানা কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছেন রাজধানীর পল্টন এলাকার যাত্রী-পথচারীরা। পল্টনের এ যানজট গুলিস্তান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে, কাকরাইল, দৈনিক বাংলা এবং ফকিরেরপুলসহ আশেপাশের এলাকার রাস্তায়ও ছড়িয়ে পড়ছে।
 
সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত পল্টন মোড়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, মোড়ের সিগন্যালের সামনে সারিবদ্ধভাবে আটকে আছে রিকশা, মোটরসাইকেল, বাস ও প্রাইভেটকার। একদিক দিয়ে একটি বা দু’টি সিগন্যাল ছাড়লেও মোড়ের চারপাশে বিভিন্ন গন্তব্যগামী যানবাহনে ক্রমাগত ওঠা-নামা করছেন যাত্রীরা। একইসঙ্গে মোড়ের বেশিরভাগ পয়েন্টেই রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
 
পথচারীরাও মানছেন না পারাপারের কোনো নিয়ম-নীতি। যে যার মতো করে রাস্তা পার  হচ্ছেন।

এসব কারণে মোড়ের চারপাশেই জটলার সৃষ্টি হচ্ছে। আর এতে বাড়ছে যানজটও।
 
মোড়ের পাশে সচিবালয় লাগোয়া ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনেই রিকশার জটলা বেশি দেখা গেছে। ট্রাফিক পুলিশকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। একই স্থানে যাত্রীবাহী বাসগুলো যাত্রী ওঠা-নামা করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকায় অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
 
মোড়ের চারদিকের রাস্তায় থেকে সমান তালে আসা গাড়িগুলোর লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। যা দক্ষিণে পল্টন থেকে গুলিস্তানের দিকে, পশ্চিমে জাতীয় প্রেসক্লাব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে মৎস্যভবন, উত্তরে কাকরাইল এবং পূর্বদিকে দৈনিক বাংলা ও ফকিরেরপুল এলাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

অথচ এই রাস্তাগুলোতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর সিগন্যাল ছাড়ছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।
 
অন্যদিকে কাকরাইলের স্কাউট ভবনের সামনে থেকে পল্টন পর্যন্ত রাস্তায় খোঁড়া-খুঁড়ি চলছে। এ কারণে যানজট আরো বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।  
 
পল্টনের হোটেল ব্যবসায়ী মুরশিদ আলম জানান, ভিআইপি পারাপারে সুবিধা, নিয়ম ভঙ্গ করে যাত্রী ওঠা-নামা এবং রিকশার জটের কারণে পল্টনে জ্যাম কমে না, বরং বাড়তেই থাকে।
 
টঙ্গী থেকে মতিঝিলগামী বিআরটিসি বাসের চালক অঞ্জন রায় বলেন, ‘জ্যাম আগের চেয়ে বেড়েছে। তার কারণ, ট্রাফিক পুলিশের ইচ্ছামতো সিগন্যাল দেওয়া। একটি সিগন্যালে কখনও কখনও ৩০ মিনিট পর্যন্ত আটকে থাকতে হয়’।
 
দায়িত্বরত শাহবাগ জোনের সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাস্তার তুলনায় এখানে গাড়ি বেশি। সচিবালয়ের পাশাপাশি এ এলাকার সরকারি অফিসের ভিআইপিদের বিশেষভাবে যাতায়াতের সুবিধা দেওয়া এবং রাস্তায় অতিরিক্ত রিকশা থাকায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ’।
 
মিরপুর থেকে সদরঘাটগামী মিরপুর ইউনাইটেড সার্ভিস পরিবহনের চালক আব্দুল রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই ২০ মিনিটের পথে এক থেকে দেড় ঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে হয়।
 
গাজীপুরের গুলিস্তান পরিবহনের চালক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘পাতাইলা করে বাস ও প্রাইভেটকার চালানোর কারণে দিন দিন জ্যাম বাড়তাছে। এইডা ছাড়াও যেহানে মনে চায় হেহানেই যাত্রী ওঠায়-নামায়। এর লাইগ্যা জ্যাম দিন দিন বাড়তাছেই’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
এমএফআই/এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।