ঢাকা: দেশে যৌনপল্লি উচ্ছেদের শতকরা ৫৩ শতাংশ ঘটনা ঘটে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের চাপে এবং ভূমি দখলের উদ্দেশ্যে। আর এই উচ্ছেদের সময় শতকরা ৯০ জন যৌনকর্মী সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
এর মধ্যে ৪৯ শতাংশ আগ্রাসী হামলার শিকার, শতকরা ২২ জনের উপর চলে শারীরিক নির্যাতন। শতকরা ১৯ থেকে ১০০ জনের বাড়িঘর ভেঙে দেয়া হয়। শতকরা ৬ জন ধর্ষণের শিকার হয়।
এক্ষেত্রে যৌনকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুরক্ষা কমিটি ও মনিটরিং কমিটি গঠনের প্রস্তাবনা জানানো হয়েছে আলোচনা সভায়।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃক "যৌনকর্মীর মানবাধিকার: যৌনপল্লি উচ্ছেদের মনোসামাজিকতা ও অর্থনৈতিক প্রভাব" শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উচ্ছেদকৃত যৌনকর্মীদের শতকরা ৯০ জন অভিযোগ করলেও পুলিশ ও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনরকম সহযোগিতা পায়নি তারা। তবে শতকরা ৬৬ জন যৌনকর্মী মনে করেন, এনজিওগুলো তাদের পক্ষে কথা বললেও যৌনকর্মীদের পুনর্বাসনের সময় এনজিও তাদের সাহায্য করছে না বা করতে পারছে না।
সমাজকল্যাণ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, সংবিধানে দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য তার অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে বলা আছে।
এই বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে আমাদেরও ভাবতে হবে। তাদের অধিকার নিশ্চিতের পথ বের করতে আলোচনা করতে হবে। এদিকে, ১০ থেকে ১৬ বছরের শিশুরা যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়ছে সে বিষয়টিও আমাদের নজরে আনতে হবে।
তিনি বলেন, শিশুরা যাতে যৌনকর্মে যুক্ত না হয় সে বিষয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে।
তাদের সুরক্ষার জন্য কমিটি গঠনের প্রস্তাবটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর এডভোকেট নীনা গোস্বামী বলেন, যৌনপল্লি উচ্ছেদ করা হলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যায় না। এতে দেখা যায় ওই এলাকায় নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। সেখানে চুরি, ডাকাতি, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, যৌনপল্লি উচ্ছেদ করতে হলে সেখানকার যৌনকর্মীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না থাকার কারণে তারা ওই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ছোট ছোট পল্লি গড়ে তোলে। এতে কোনো সমাধান আসছে না বলে মনে করেন তিনি।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এএসএম আমানুল্লাহ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
এসজেএ/আরআই