ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কোড ব্যবহারের ভুলে থমকে গেছে উন্নয়ন প্রকল্প!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
কোড ব্যবহারের ভুলে থমকে গেছে উন্নয়ন প্রকল্প!

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান বা পঙ্গু হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ চলতি অর্থবছরে মোট বরাদ্দ ছিল ১৩৮ কোটি টাকা।

ঢাকা: জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান বা পঙ্গু হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ চলতি অর্থবছরে মোট বরাদ্দ ছিল ১৩৮ কোটি টাকা। হাসপাতালটির আরও আধুনিকায়ন করতে একটি প্রকল্পের আওতায় এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

কিন্তু হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য নির্ধারিত অর্থনৈতিক সাব-কোড (৬৮১৩) ব্যবহার না করে ভুলে অফিস যন্ত্রপাতির জন্য নির্ধারিত অর্থনৈতিক সাব-কোড(৬৯১৯) ব্যবহার করা হয়।  

হাসপাতালের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের এ ভুলে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে(এডিপি) বরাদ্দকৃত অর্থের বিভাজনসহ অর্থছাড়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সাব-কোড সংশধোনে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।  
 
এ ভুল সংশোধন না করলে বরাদ্দ পাবে না পঙ্গু হাসপাতাল। ফলে অর্থোপেডিক ও ট্রমা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। এমনকি বরাদ্দের অভাবে দক্ষ অর্থোপেডিক চিকিৎসক তৈরি এবং গবেষণার মাধ্যমে অর্থোপেডিক বিষয়ে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজও ব্যহত হচ্ছে।  
 
কোড ভুলের কারণে ‘জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান(এনআইটিওআর) পঙ্গু হাসপাতাল সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজও থমকে গেছে।  

সূত্র জানায়, ৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে না পেলেও বর্ধিত সময়ে প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ পাওয়ার আশা করছে পঙ্গু হাসপাতাল। মেয়াদ ও কিছু ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পিইসি সভাও অনুষ্ঠিত হবে। সভায় মূলত কোড ভুল ও বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হবে বলেও সূত্রে জানা গেছে।
 
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান ডা. আ এ মো. মহিউদ্দিন ওসমানী বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পটি চলমান আছে। এর কিছু কাজের সংশোধন হবে। দ্রুততম সময়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আমরা এ বিষয়ে পিইসি সভা করবো। ’
 
সংশোধনের ফলে প্রকল্পের ব্যয় ১৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।  
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভুলের কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নেও নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। ৩৩৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার মধ্যে গত বছরের জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। যা মোট ব্যয়ের মাত্র ১৫ শতাংশ।  

৫০০ শয্যার পঙ্গু হাসপাতাল বর্তমান সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার পর থেকে হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা ও জনবল বাড়ানো হয়নি। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা বৃদ্ধির ফলে পঙ্গু হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই স্বল্প সংখ্যক জনবল এবং শয্যা সংখ্যা নিয়ে সঠিকভাবে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।