ঢাকা: দীর্ঘ ১৯ বছর পার হলেও কোনো সরকারই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসেনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলের কনফারেন্স রুমে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার একটা রাজনৈতিক সমাধান প্রদান করা। জুম্ম জনগণের জাতিগত অস্তিত্ব সংরক্ষণ ও বিকাশের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ শাসনব্যবস্থা কায়েম করা। কিন্তু এত বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কোনো বিধিমালা এখনও হয়নি। এগুলো আটকে রাখা হয়েছে। এ গুলো সরকারের এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে ঘোরাঘুরি করছে, কিন্তু তৈরি হচ্ছে না।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন করা হলেও তার যথাযথ বাস্তবায়নে প্রশাসন কর্তৃক আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে দুটো শাখা অফিস বানানো প্রয়োজন হলেও তা এখনো বানানো হয়নি, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা হয়নি, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রভৃতির অভাবে বিচারিক কাজগুলো করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পূর্ব ঘোষিত ১০ দফা কর্মসূচি ও অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা করেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সরকারের পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব চুক্তি বাস্তবায়নের অনুকূলে নয়। চুক্তি বাস্তবায়নে প্রশাসন ও মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর চরম অনীহা দেখা যাচ্ছে।
দেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠন, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ কর্তৃক যথাযথ পদক্ষেপ ও কর্মসূচি না নেওয়ার কারণে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আইইডি’র নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
এসজেএ/আরআই