পারাবত এক্সপ্রেস থেকে: অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই শীতের আমেজ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু নগরে এ আমেজটা সকাল ৭-৮টা পর্যন্তই বোঝা যায়।
মধ্য অগ্রহায়ণের ভোরে নগর ছেড়ে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রা হলো ‘দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ’ সিলেটের উদ্দেশে। বিমানবন্দর এলাকা পেরোতেই ঘন কুয়াশার দাপট বোঝা যাচ্ছিল। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে মনে হচ্ছিল ঘন কুয়াশার চাদর ঢেকে রেখেছে গাছপালা-প্রকৃতিকে। এই কুয়াশার চাদর প্রায় ৯টা পর্যন্তও যেন ভেদ করতে পারছিল না সূর্য।
কুয়াশার এই দাপটের মধ্যেই ট্রেন ছুটছিল। একেবারে গাঁয়ের ভেতর দিয়ে যখন যাচ্ছিল, আশপাশে আবছা-আবছা চোখে পড়ছিল কৃষকের দলের ব্যস্ততা, আমন ধান ঘরে তুলতে।
বাংলাদেশের ট্রেন ঠিক সময়ে ছাড়ে না বলে যে বদনাম রয়েছে, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস সেটিকে তেমন ভুল প্রমাণ করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ছয়টা ৩৫ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে পারাবত বিমানবন্দর স্টেশনে ৭টায় ঢোকার কথা থাকলেও ঢুকেছে ১৭-১৮ মিনিট দেরিতে। যেখানে যাত্রাই বাতিল হয়ে যায়, সেখানে এই ‘মিনিটকয়েক’ না হয় হলোই। আসন পড়েছে ‘চ’ বগিতে, ট্রেনের মাঝামাঝি।
বেলা গড়াতেই যাত্রা শুরুর শীতলতার রেশ একটু একটু করে কেটে গেল। এর সঙ্গে সোনারঙা রোদ মিশে বেশ মিষ্টি আমেজ। কু ঝিক ঝিক, কু ঝিক ঝিক। জানালায় যেন রুপসী বাংলার ক্যানভাস। দূরের গ্রাম, ধানক্ষেত, আলপথ আর তাল-সুপারির সারি চোখে পড়ছে খানিকটা স্পষ্টভাবেই।
দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে পহেলা অগ্রহায়ণ নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে গ্রাম-বাংলার ঘরে-ঘরে। তবে কৃষকের আমন ক্ষেতের সব ধান এখন পাকা শেষ হয়নি। তাই কিছু ধান কাটাও বাকি রয়ে গেছে। শেষ পর্যায়ের সেসব ধান কেটে গোলায় তুলছেন চাষিরা।
ধান কাটার এ মনোরম দৃশ্য ট্রেনের ভেতর থেকেই বেশ উপভোগ্য হচ্ছে আর সিলেট পৌঁছানোর অপেক্ষায় কাটছে আনন্দময় মুহূর্তগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬
এনটি/জেডএস