ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইঞ্জিনের অভাবে ট্রেন পরিচালনা ব্যাহতের আশঙ্কা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৬
ইঞ্জিনের অভাবে ট্রেন পরিচালনা ব্যাহতের আশঙ্কা ফাইল ফটো

বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে বর্তমানে পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) নেই। দ্রুততম সময়ে মিটারগেজ (এমজি) ডিজেল ইলেকট্রিক (ডিই) লোকোমোটিভ কেনা না হলে মিটারগেজ সেকশনের সুষ্ঠু ট্রেন পরিচালনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে বর্তমানে পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) নেই। দ্রুততম সময়ে মিটারগেজ (এমজি) ডিজেল ইলেকট্রিক (ডিই) লোকোমোটিভ কেনা না হলে মিটারগেজ সেকশনের সুষ্ঠু ট্রেন পরিচালনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

 

ইঞ্জিনের সংখ্যা না বাড়ালে নতুন ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে রেলপথে যাত্রীসেবা অব্যাহত রাখাও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাময়িক চাহিদা পূরণ ও চলমান সংকট কাটাতে আপাতত ৭০টি ইঞ্জিন কেনা জরুরি।   তা না হলে মিটারগেজের ট্রেন পরিচালনা সেবা অল্প সময়ের মধ্যেই ভেঙ্গে পড়বে।

 

সে কারণেই ৭০টি এমজি ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ ক্রয় সংক্রান্ত ঋণ প্রস্তাব অনমনীয় ঋণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সেটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগেও (ইআরডি) বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছে।

লোকোমেটিভের অভাবে মিটারগেজে রেল পরিচালনার সিডিউল বিপর্যয় যেন না হয়, সেজন্যই জরুরি ভিত্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ০৮ ডিসেম্বর ইআরডি’র অনুবিভাগ প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব (ইউরোপ) মোহাম্মদ আলকামা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ওই সভার প্রধান উদ্দেশ্য, ঋণের মাধ্যমে স্পেন থেকে ৭০টি লোকোমোটিভ কেনা।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমানে ২৮০টি ইঞ্জিন আছে, যার ১৮৬টি এমজি ও ৯৪টি ব্রডগেজ (বিজি)। ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল সাধারণত ২০ বছর নির্ধারণ করা হয়। অথচ ১৯২টি ইঞ্জিন ইতোমধ্যেই সে আয়ুষ্কাল অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ১৫৫টিরই বয়স ৩০ বছরের বেশি, যার ১০০টি এমজি ও ৫৫টি বিজি।

আয়ুষ্কাল অতিক্রান্ত ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণ যেমন ব্যয়বহুল, তেমনি ফেইলিউরের সংখ্যাও বেশি। বর্তমানে রেলপথে জোড়াতালি দিয়ে যাত্রীসেবা দেওয়া হচ্ছে। ইঞ্জিনের অভাবে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।
 
২০১৪ সালে চীন ও জাপানকে ওই ৭০টি ইঞ্জিন কেনায় অর্থায়নের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু দেশগুলোর সাড়া মেলেনি। পরে ইরান-বাংলাদেশ যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের আওতায় ইরানের রফতানি উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে সেগুলো সরবরাহের প্রস্তাব করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ স্পেন থেকে জরুরি ভিত্তিতে ইঞ্জিন কেনার পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রতিটি ১৪ কোটি টাকা দরে ৭০টির দাম পড়তে পারে ৯৮০ কোটি টাকা।
 
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব  মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু লোকোমোটিভ ব্যবহারের অযোগ্য। অনেক আগেই অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পার হয়েছে। এগুলো মেরামতেও অনেক খরচ হচ্ছে। এ সংকট মোকাবেলা ও যাত্রীসেবার মান অক্ষুন্ন রাখতে স্পেন থেকে উন্নতমানের ৭০টি লোকোমোটিভ কিনবো’।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।