ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সবুজ শ্যামলিমায় এক্সেলসিয়র সিলেট  

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৬
সবুজ শ্যামলিমায় এক্সেলসিয়র সিলেট   ছবি- অনিক খান 

গ্রামীণ পরিমণ্ডলের ছায়াসুনিবিড় পরিবেশ। দিগন্তজোড়া এ সবুজের মাঝে রয়েছে যেনো অরণ্যের সজীবতা। 

খাদিমপাড়া, সিলেট থেকে: গ্রামীণ পরিমণ্ডলের ছায়াসুনিবিড় পরিবেশ। দিগন্তজোড়া এ সবুজের মাঝে রয়েছে যেনো অরণ্যের সজীবতা।

 

এ সবুজের মাঝে প্রায় ১৭ একর জমির উপর বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে একটি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট। প্রকৃতির বিশালতায় নান্দনিক সৌন্দর্যে ঠাসা এ হোটেলের নাম ‘এক্সেলসিয়র সিলেট’। বিশিষ্ট শিল্পপতি ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসী সাঈদ চৌধুরী এ রিসোর্টের উদ্যোক্তা।  

নিশুতি রাতে এ রিসোর্টের পরিবেশ হয়ে ওঠে আরও মনোরম। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য মুগ্ধ করে অতিথিদের। ঘুরে বেড়ানো, প্রশান্তি আর সজীবতার মধ্যে বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে নিত্যদিনই দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে ছুটে আসছেন অনেকেই।  

এক্সেলসিয়র সিলেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ চৌধুরীর ভাবনা-চিন্তাতেও রয়েছে এক ধরনের বিশালতা।  

দেশের প্রথম রেজিস্টার্ড এ ইকোপার্ককে ঘিরে পরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানও প্রস্তুত করেছেন তিনি। আগামী দু’বছর এখানে প্রায় দেড়শো কোটি টাকার মতো বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছেন।  

এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে এটি শুধু বাংলাদেশই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় ও নান্দনিক রিসোর্টের চেহারা পাবে, এমন আশাবাদী উচ্চারণ উদ্যোক্তা সাঈদ চৌধুরীর কণ্ঠে।  

বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে এ রিসোর্টে প্রকৃতির সান্নিধ্যে ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেলো এসব তথ্য।  

সিলেট জেলা সদর থেকে সাড়ে নয় কিলোমিটার আর সিলেট আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে স্থানীয় খাদিমপাড়ায় নির্মিত হয় হলিডে রিসোর্ট ও ইকোপার্ক জাকারিয়া সিটি। গ্রামীণ পরিমণ্ডলে প্রায় ১৭ একর জমির ওপর ২০০০ সালে গড়ে ওঠে এটি।  

এরপর এক্সেলসিয়র গ্রুপ এ রিসোর্ট কিনে নেয়। নতুন নামকরণ হয় এক্সেলসিয়র সিলেট। এ রিসোর্টের মূল উদ্যোক্তা তিনজন হলেও রয়েছেন বিশ জনের মতো বিনিয়োগকারী।  

একটু গ্রাম্য এলাকায় হলেও এটি একেবারেই শহরতলীতে। রাজধানী ঢাকা থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থাও খারাপ নয়। ফলে এ রিসোর্টের সৌন্দর্যের খবর প্রকৃতিপ্রেমী ও বিনোদন পিয়াসী মানুষের কাছে পৌঁছাতে খুব একটা সময় লাগেনি।  

এ রিসোর্টের বিশেষত্ব হচ্ছে- এখানে রয়েছে আগর, আতর, চন্দন, আম, জাল, লেবু, আমলকিসহ প্রায় ৪শ প্রজাতির বৃক্ষরাজি। রয়েছে অনেক দুর্লভ ঔষুধি গাছও।  

সৌন্দর্যবর্ধক নানা প্রজাতির গাছ লাগিয়ে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে সবুজ ছায়াবীথি। শীতের রাতে এখানকার নানা প্রজাতির গাছে পড়তে শুরু করে টলমলে শিশির বিন্দু।  

এ শিশির মনের ভেতর তৈরি করে এক ভিন্ন আবহ। রাতের আবছায়া আলোয় এখানকার সবুজ প্রকৃতি হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর। রাতে শেয়ালের ডাক আর পাখির কিচির-মিচির শব্দে এখানকার দৃশ্য হয়ে হয়ে ওঠে অপরূপা।  

ঘুরে দেখা গেলো, এ রিসোর্টের ভেতরেই রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। রয়েছে হরিণ, ঘোড়াসহ কতোকিছু। তিনভাগে বিভক্ত বিনোদন পার্কে রয়েছে জয়েন্ট হুইল, সুপার চেয়ার, ফাওয়ার কাপ, মিনি ট্রেন, বাম্পার কার, জেড কোস্টার, মেরি গো রাউন্ড, ডল গেইম, সুইম বলসহ আকর্ষণীয় সব রাইডস।  

এ হোটেল কাম ইকোপার্কে অতিথিদের থাকার জন্য রয়েছে মধুমালতী রিসোর্টে ৩০ টি কক্ষ। আর ক্যামেলিয়া রিসোর্টে রয়েছে ২০টি কক্ষ।  

রয়েছে প্রায় আড়াইশোজন ধারণক্ষমতার কনফারেন্স কক্ষ, বিশাল সুইমিং পুল এবং স্পোর্টস ও লেজার সেন্টারে আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ 

এখানকার মনোরম পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশংসা করেন অনেকেই। তাদের ভাষ্যে, কর্তৃপক্ষের আতিথেয়তা চমৎকার। চিত্তবিনোদনের জন্য আধুনিক ও উন্নতমানের সব ব্যবস্থা মিলছে এখানে।  

এক্সেলসিয়র সিলেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ চৌধুরী বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানান, এ রিসোর্টকে ঘিরে তার স্বপ্নের ক্যানভাস ও নানান পরিকল্পনার কথা। এ রিসোর্টের হাত ধরেই দেশে ইকো পার্কের থিম ছড়িয়ে পড়ে।  

তিনি বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে কাঠমান্ডু, কুয়ালালামপুর ও ব্যাংককের আদলে এখানে রিসোর্ট তৈরি করা হবে। গড়ে উঠবে মোট ১৬ টি কটেজ।  

সাঈদ চৌধুরী বলেন, এখানে এলে ডায়াবেটিস ভাল হয়ে যায়। নিশুতি রাতের পরিবেশ অসাধারণ। রাতে পাখির ডাকে মুগ্ধ হওয়ার মতন।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৬
এমএএএম/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।