ঢাকা: সারা বছর চলতে থাকা খোঁড়াখুঁড়ি আর রাস্তার বেহাল দশাতে রাজধানীর সড়কগুলো যেন ধূলাতে ভাসছে। শরীর সাদা করেই থেমে থাকে না এই ধুলাবালি।
শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ধুলায় ধূসরিত রাজধানীর চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
ঢাকার মোহাম্মাদপুর বাসস্টান্ড এলাকার রাস্তার বেহাল দশার ফলে গাড়ির চাকা এক বার ঘুরতেই ধুলাতে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। নিজের নিঃশ্বাস নিয়ন্ত্রণ চলাচল করছে যাত্রী ও পথচারীরা।
এছাড়া নগরীর শ্যামলী, মালিবাগ, মৌচাক ও কাকরাইল নয়াবাজার, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, নীলক্ষেত, সায়েদাবাদ, গুলিস্তানসহ ঢাকার অনেক এলাকায় এখন ধূলার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নগরবাসী। তবে এমন ধূলার কারণ হিসেবে কেউ-কেউ বলছে অব্যবস্থাপনা আবার কেউ বলছেন ঋতুর পরিবর্তের ফল।
আসাদগেট এলাকায় সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল রশিদ (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই এখন আমাদের চলাফেরা পথ। নাক না ধরে রাস্তা পার হওয়া যায় না। হাঁচি-কাশির সমস্যা থাকলে তো কথাই নেই। খাবারের দোকানগুলো চলছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। এভাবেই চলছে, আমরাও মানিয়ে নিচ্ছি।
শ্যামলীতে ব্যবসা করা মুদির দোকানদার রহিম বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় গাড়ি এসে থামার সঙ্গে-সঙ্গে পিছন দিক থেকে ধূলা এসে ভরে যায়। এক মিনিটের মধ্যে দোকানসহ আমি সাদা হয়ে যাই। এসব নিয়ন্ত্রণ করা বা দেখার যেন কেউ নেই। যত দুর্ভোগ সব জনগণের।
ব্যবসার আচল অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, বেচাকেনা আগের মতো আর হয় না, রাস্তায় ধুলাবালির কারণে দোকান থেকে কেউ কিছু খেতে চায় না।
নীলক্ষেত এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিক (২৪) একটু অক্ষেপ করেই বাংলানিউজকে বলেন, আমার এমনিতেই একটু নিঃশ্বাসের সমস্যা রয়েছে। অপরিকল্পিত এই নগরীর ধুলাবালিতে রাস্তায় বের হলেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে, যেখান থেকে এসেছি, সেখানেই ফিরে যাবো। থাকবো না এই ঢাকা শহরে।
‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’র সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সোবাহান ধুলবালির সার্বিক অবস্থা নিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, বাতাসে দূষণের পরিমাণ বাড়ার ফলে, মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে। এটা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে-সঙ্গে দূষণকারীদের আইনের আওতায় আনতে পারলে, দূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব।
এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজে বলেন, ধুলাবালি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ধুলাবালিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে যাদের অ্যাল্যার্জিক রাইনাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সাইনোসাইটিস, অ্যাজমাজনিত সমস্যা আছে। তাছাড়াও ধুলাবালিজনিত রোগীর সংখ্যাও আজকাল দিন-দিন বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৬
এসটি/টিআই